গণকবরের প্রাচীর নির্মাণে বাধা, ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদা দাবি

1 day ago 8

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের শান্তির ঠিকানা গণকবরস্থানে প্রাচীর নির্মাণের কাজে বাধা, মালামাল লুটপাট, ভাঙচুর এবং চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বরিশালের কথিত ছাত্র সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে কৃষি ব্যাংকের নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিন একর ৩৭ শতাংশ জমি কেনেন ব্যারিস্টার মোজাহিদুল ইসলাম। এর মধ্যে ২০১৯ সালে তিনি ৯০ শতাংশ জমি স্বপ্নের ঠিকানা গণকবরস্থানের জন্য ওয়াকফ করেন। আদালতের রায়ে জমি নিশ্চিত হওয়ার পর তিন পাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। পরে বাকি অংশের দেওয়াল নির্মাণ শুরু করলে বাধা আসে। এসময় চাঁদা দাবি, লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় গণকবরের আমমোক্তার মুশফিকুর রহমান বাদী হয়ে জেলা জজ আদালতে দ্রুত বিচার আইনে নাহিদসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্ত নাহিদ ইসলাম চন্দ্রপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নাম ব্যবহার করে পুলিশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।

গণকবরের প্রাচীর নির্মাণে বাধা, ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদা দাবি

শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে বাউফল প্রেসক্লাবের বীর উত্তম সামসুল আলম মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন শান্তির ঠিকানা গণকবরস্থানের আমমোক্তার মুশফিকুর রহমান।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‌‘আদালতের রায়ে নির্ধারিত এই জমিতে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। নাহিদ ইসলাম নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে মানুষকে ভয়ভীতি দেখান। থানায় ফোন দেন, মিথ্যা মামলায় ফাঁসান। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’

আরেক বাসিন্দা শাহাদত হোসেন বলেন, “যখন কাজ শুরু হয়, তখন নাহিদ দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই জমি আদালতের রায়ে নিশ্চিত হওয়া জানালে বলেন—‘আদালত বুঝি না, টাকা দিতে হবে, না দিলে কাজ হবে না।”

গণকবরের প্রাচীর নির্মাণে বাধা, ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদা দাবি

গণকবরের আমমোক্তার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর আগে তিন পাশের বাউন্ডারি দিয়েছি। একপাশের বাউন্ডারি দিতে গেলে নাহিদ ও শিপন বাধা দেয়, ভাঙচুর করে এবং দুই লাখ টাকা দাবি করে। এমনকি রড-সিমেন্টও লুটে নেয়। তাই আমরা মামলা করেছি এবং মামলা চলমান।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই গণকবর জনগণের জন্য করা হচ্ছে, যাতে মানুষ মরদেহ দাফন করতে পারে। আমরা চাই বাধাহীনভাবে কাজ সম্পন্ন হোক।’

তবে অভিযুক্ত নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। কয়েক বছর ধরে পটুয়াখালীতে যাই না। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা। যে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে, সেখানে আমাদেরও জমি রয়েছে। আমি কখনো কোনো চাঁদা চাইনি।’

এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। প্রথমটি আদালতের নির্দেশে হয়েছে। আমরা আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। দ্বিতীয় মামলাটি মারামারির। এটির তদন্ত চলছে।’

মাহমুদ হাসান রায়হান/এসআর/এমএস

Read Entire Article