দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং শেখ হাসিনার বিচার ত্বরান্বিত করতে নির্বাচিত সরকার দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটভুক্ত জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দুদু বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে এবং শেখ হাসিনার বিচার আরও ত্বরান্বিত হবে। এ ছাড়া বিদেশে যে টাকা পাচার করা হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই ভূমিকাগুলো একমাত্র পালন করতে পারে নির্বাচিত সরকার।
তিনি বলেন, আমি মনে করি- বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের কথা বলেছে, যে রোডম্যাপ দিয়েছে, সে অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। নির্বাচন হলে আমি মনে করি- বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালনকারী দল বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। ফ্যাসিবাদী হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য দলও ভূমিকা পালন করেছে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, হাসিনাতন্ত্রের পতন হয়েছে প্রায় এক বছরের অধিককাল; কিন্তু প্রত্যাশিত গণতন্ত্রের উত্তরণের যে বিষয়টি ছিল, সেটি এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। আমরা ১৫ থেকে ১৬ বছরে ৩টি নির্বাচন দেখেছি। তৎকালীন দাবিদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাধীনে তার নির্বাচন কমিশনে এসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে নির্বাচন কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষে তো যায়নি, বরঞ্চ গণতন্ত্রবিনাশী ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর এখন মানুষ তার পছন্দের প্রার্থী, মার্কা এবং দলের পক্ষে ভোট দিতে চায়। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয়—সরকার তার এক বছরের অধিককালেও এই দায়িত্বটি এখনো পালন করতে পারেনি। আবার কোনো কোনো মহল নানান বক্তব্য ও কর্মসূচি দিচ্ছে এবং বলছে, সেটি (বিভিন্ন দাবি-দাওয়া) আগে সম্পূর্ণ করতে হবে। এই দাবি দিয়ে তারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি মনে করি- কোনো রাজনৈতিক দল তার কর্মসূচি ভালোবাসে বলেই সেই দল করে। কিন্তু সেই কর্মসূচি যদি প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তাহলে জনগণের কাছে গিয়ে সেই ম্যান্ডেট নিয়ে আসতে হবে এবং সরকার গঠন করতে হবে। তারপরে তারা নিজেদের কর্মসূচি প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পর কখনো জাতীয় সংসদে একটা সিটও পায়নি। এখন তারাও বলছে, তাদের মতো করে সরকারকে কাজ করতে হবে। এটা হাস্যকর, এটা চাপিয়ে দেওয়ার মতো একটা ঘটনা।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, জাগপার কেন্দ্রীয় নেতা আওলাদ হোসেন শিল্পীসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।