বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আন্দোলন শেষ হয়নি, মাত্র সরকার পরিবর্তন হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আবার আমাদের মাঠে নামতে হতে পারে। এ জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, বিদেশি চক্রের চেয়ে দেশীয় চক্র এখন বেশি ষড়যন্ত্র করছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরের আন্দোলন হাইজ্যাক হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর রায়। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের আন্দোলনের কথা স্বীকার করে না। তারা শুধু ৫-৬ জনের কথা বলেন, শুধু জুলাই আন্দোলনের কথা বলেন। তাহলে বাকিরা কোথায়? তবে এই সরকার ব্যর্থ হলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বিএনপিকে ভোগ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন দলটির এই নীতি-নির্ধারক।
গয়েশ্বর রায় বলেন, আন্দোলনের ফল সবাই ভোগ করতে পারে না, কতিপয় কয়েকজন তা ভোগ করে। অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ বিএনপির চাইতে অন্য একটি দলকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি। বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া এখনো চলমান, এ সরকারের অভিজ্ঞতার বড়ই অভাব।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ধরলাম শেখ হাসিনাকে এক্সিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশের হারুনরা কীভাবে পালিয়ে গেল? তাদের তো প্রচুর অবৈধ টাকা ছিল। আমার জানা মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকে এসব টাকা জমা পড়েনি। কারা আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের দেশ থেকে পালাতে সহযোগিতা করেছেন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ভারতের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, বাংলাদেশে কয়েক লাখ ভারতীয় নাগরিক বৈধ-অবৈধ উপায়ে চাকরি-ব্যবসা করছে। অবৈধদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যবস্থা নেবে। আমি ভারতকে বলব, আপনারা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছেন, এটা অব্যাহত রাখেন। সব মিলিয়ে কিছুদিন পর টের পাবেন, কত ধানে কত চাল- আপনাদের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। এ সময় অবৈধ ভারতীয় বাসিন্দাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ভারতের সাথে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহকে নির্দেশ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ভারত আমাদের পানিতে-ভাতে মারতে পারবে না; এতে তারা নিজেরাই মরবে। আমরা ভারতে না গেলে দেশের শতকোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
এর আগে সকালে কৃষক দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং প্রয়াত নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।