অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসলেও সামগ্রিক অর্থনীতিতে সংস্কারের চাকা ঘোরেনি বলে মন্তব্য করেছেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ এম মাশরুর রিয়াজ। তার মতে, এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না। এতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘সংকট থেকে স্থিতিশীলতা: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গণতন্ত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে স্থবিরতার কারণে নারী ও তরুণদের কর্মসংস্থান কমে যাচ্ছে।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ঋণ, রাজস্ব, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়েছে। যা ঠিক করতে গেলে তিনটি জিনিস করতে হবে। প্রথমত আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন।
সরকার বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না উল্লেখ করে মাশরুর রিয়াজ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ভালো কাজ করেছে। সেন্ট্রাল ব্যাংককে তার স্বাধীনতা ফেরত দিয়েছে, সংস্কারের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
গত এক বছরে অর্থনৈতিক সংস্কার হয়নি জানিয়ে অর্থনীতিবিদ এম মাশরুর বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সংস্কার, পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার বহুবছর ধরে বকেয়া হয়ে আছে। কিন্তু আগে তো হয়নি, গত এক বছরে সেই রিফর্মের চাকা আসলে ঘোরেনি। জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার আসার আগে সেই সংস্কারের যেই শক্তি, আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন হয় সেটা পাওয়া যাবে না। ইলেকশনের মাধ্যমে সেটা খুব দ্রুত হওয়া প্রয়োজন।
এম মাশরুর রিয়াজ আরও বলেন, আটলান্টিক কাউন্সিল, হেরিটেজ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন দেখাচ্ছে যে, গণতান্ত্রিক পরিবেশের সঙ্গে একটা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জড়িত। এ জন্য আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হবে, সেখানে নির্বাচিত সরকার ও নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ আহসান খান বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে কি হয় আমরা গত ১৬ বছরে দেখেছি। গণতন্ত্র ছিলো না বলেই লুটপাট হয়েছে। ঋণ খেলাপী বেড়েছে। স্বচ্ছতা-জবাদিহি চাইলে গণতন্ত্র থাকতেই হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদ আল তিতুমীর, বিএনপি নেতা ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়ালসহ জাপান, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও অষ্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমকে/জেআইএম