গাইবান্ধা সদর উপজেলায় গোপনে জিয়া পরিষদের ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে খন্দকার সফিউল ইসলাম রিপুকে আহ্বায়ক ও মুকুল মাসুদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা জিয়া পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুল আউয়াল আরজু ও সদস্য সচিব ডা. আ. খ. ম. আসাদুজ্জামান সাজুর চলতি মাসের ৬ তারিখে স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানা গেছে মর্মে একটি জাতীয় দৈনিকে রোববার খবর প্রকাশ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার (৯ ডিসেম্বর)সকালে বিএনপির নেতাকর্মীর কাছে কমিটির কপি চাইলে কেউ কিছু বলতে পারেননি।
জেলা জিয়া পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুল আউয়াল আরজুর কাছে কমিটি অনুমোদনের কপি চাইলে তিনি বলেন, কমিটির কিছু সংশোধন করা হবে। এজন্য কমিটির কপিটি দেওয়া যাবে না। অনুমোদন কমিটির নিউজ গণমাধ্যমে প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। দীর্ঘদিনের রাজপথের নেতারাও জানেন না কমিটির সদস্যদের বিষয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আহ্বায়ক খন্দকার সফিউল ইসলাম রিপুকে ও সদস্য সচিব মুকুল মাসুদকে গত ১৫ বছরে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বিএনপির কর্মী বা সমর্থক হিসেবে পরিচয়ও দেননি তারা।
মুকুল মাসুদ আওয়ামী লীগের পুরো সময় ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে সুবিধা নিয়েছেন। ৪১ সদস্য অনুমোদন হওয়া কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও আওয়ামী লীগের ৩১ সুবিধাভোগী। তারা সাড়ে ১৫ বছর বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সুবিধা নিয়েছেন।
তৃণমূলের নেতারা জানান, আব্দুল আউয়াল আরজু একজন আমেরিকা প্রবাসী। ২০২২ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন। পদ পান জেলা জিয়া পরিষদের আহ্বায়কের। তার কিছুদিন পর বাগিয়ে নেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির পদও। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। গাইবান্ধা জেলাও ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থদের গ্রেফতারের পাশাপাশি বাড়িঘরে পুলিশ হামলা চালায়। সেসময় গ্রেফতারের ভয়ে আব্দুল আউয়াল আরজু আমেরিকায় পালিয়ে যান। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূলের এক নেতা বলেন, নেতারা মুখে বলেন স্বৈরাচার মুক্ত আর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মীর বিএনপির রাজনীতিতে জায়গা হবে না, বাস্তবে নেতারাই বিভিন্নভাবে স্বৈরাচারের দোসরদের বিএনপিসহ অঙ্গসংঠনে নিচ্ছেন। আজ সুদিনে বিএনপির নেতার অভাব নেই। যারা আওয়ামী লীগের সময় সুবিধা নিয়েছেন, তারাও নিজেদের বিএনপির সাবেক নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে ত্যাগী নেতা কর্মীরা একদিন দল করা বাদ দিবে। তাই কমিটি দেওয়ার আগে আত্মীয়-স্বজনের দিকে না দেখে ত্যাগীদের পদ দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক বলেন, গাইবান্ধা সদর উপজেলার জিয়া পরিষদের কমিটি অনুমোদনের কথা শুনছি। তবে কারা এই কমিটির সদস্য আমি তা জানি না। তবে আওয়ামী লীগের কোনো সুবিধাভোগী কমিটিতে জায়গা পেলে তাদের বাদ দেওয়া হবে।
এ এইচ শামীম/এফএ/জেআইএম