গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা বাড়ানোর সর্বশেষ প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোট হবে। আগে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর পরেও এবার সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এই পদক্ষেপ সমর্থন করছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়ছে। খবর এএফপির।
১০টি অস্থায়ী সদস্য দেশ গত আগস্টের শেষ দিকে খসড়া প্রস্তাবের আলোচনা শুরু করে। এর আগে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দেয়, যা প্রায় দুই বছর ধরে ইসরায়েলের অব্যাহত যুদ্ধের ফলে হয়েছে।
প্রথম দিকের খসড়ায় মূলত সহায়তা প্রবেশে বাধা তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া মনে করেছিল শুধুই মানবিক দিক নিয়ে প্রস্তাব পাস করলেও যুক্তরাষ্ট্র সেটা ভেটো দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার ভোটে যাওয়া নতুন খসড়ায় সহায়তা প্রবেশের পথ খুলে দেওয়ার পাশাপাশি বলা হয়েছে, গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে এবং সব পক্ষকে তা মেনে চলতে হবে।একইসঙ্গে জিম্মিদেরও অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের প্রস্তাব এর আগেও একাধিকবার নাকচ করেছে। সর্বশেষ তারা জুনে ভেটো দিয়ে তাদের মিত্র ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়েছে।
ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে
ইউরোপের এক কূটনীতিক এএফপিকে বলেন, এবারকার প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো হুমকিকে অগ্রাহ্য করার স্পষ্ট বার্তা। তিনি বলেন, যদি একেবারেই চেষ্টা না করি, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জবাবদিহিতাই থাকে না এবং ১৪টি সদস্য রাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি বলেন, এটা হয়তো গাজার ফিলিস্তিনিদের কষ্ট খুব একটা লাঘব করবে না, তবে আমরা অন্তত দেখাতে পারি যে আমরা চেষ্টা করছি।
গতবারের ভেটো নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪ সদস্যের মধ্যে বিরল ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল। তারা ক্রমশ প্রকাশ্যে বলছেন যে, ইসরায়েলকে চাপ দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।
এদিকে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিযুক্ত আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। সেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তারা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে ‘ধ্বংস’ করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য হিসেবে গুরুত্ব পাবে।
টিটিএন