ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ব্যর্থ করার দায়ে অভিযুক্ত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের রাজনৈতিক শাখার জ্যেষ্ঠ সদস্য বাসেম নাঈম এ অভিযোগ করেন।
বাসেম নাঈমের দাবি, গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি নস্যাৎ করতে নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন।
হামাস সংগঠনটির অভিযোগ, ইসরায়েলি সরকার দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয়। আগামী ১ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শেষ হবে। এর আগেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরবর্তী পর্যায় নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর কথা ছিল।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের বিস্তারিত, যা মূলত ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে বলে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে আলোচনা করার কথা ছিল।
এই পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের জন্য গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলার পর মানবিক সহায়তা পৌঁছানো, ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের আংশিক প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। চুক্তি অনুযায়ী, যদি দ্বিতীয় পর্যায় চূড়ান্ত হয়, তাহলে সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হবে।
আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাসেম নাঈম আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আবারও এই চুক্তিকে ভণ্ডুল ও গুরুত্বহীন করার নোংরা খেলা চলছে। আর এই খেলার মাধ্যমে নতুন করে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, হামাস চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং চুক্তির অধীনে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।
হামাসের এই নেতা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী মানবিক সহায়তা গাজায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং নেতজারিম করিডর (গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে সংযোগকারী সরু পথ) থেকে সেনা প্রত্যাহার স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত মাসের শুরুর দিকে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন যে, হামাসের অভিযোগগুলো সঠিক। তবে ইসরায়েলি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এরপর গতকাল হামাস চুক্তির শর্ত মেনে ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এখনো ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে গাজায় ফেরত পাঠায়নি।