গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগে রমরমা বাণিজ্য

2 weeks ago 10
গাজীপুরের কোনাবাড়ী নতুন বাজার এলাকায় শিল্পকারখানা, আবাসিক ভবন আর অসংখ্য মানুষের ভিড়ে প্রতিদিনই ব্যস্ততা লেগেই থাকে। কিন্তু এই জনবহুল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবৈধ ব্যবসা। সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে, রাষ্ট্র হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব।  কোনাবাড়ী নতুন বাজার এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা। গড়ে তুলেছে এক অবৈধ গ্যাস ব্যবসার সিন্ডিকেট। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি প্রতারক চক্রটি তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে বা তদের ঘনিষ্ঠ দাবি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করাই হচ্ছে এই চক্রের মূল হাতিয়ার। তারা কখনো বলে সংযোগ কেটে দেবে, কখনো বলে মামলা হবে, আবার কখনো দাবি করে তারা নাকি তিতাসের হয়ে অভিযান চালাচ্ছে।  ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- গ্যাস লাইনের নতুন সংযোগ প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয় তারা। প্রতিটি চুলার জন্য মাসে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে। এভাবে গড়ে উঠেছে এক নিয়মিত মাসোহারা ব্যবসা।  ভুক্তভোগী আব্দুল মালেক নামের এক দোকানদার জানান, আমার বাসায় গ্যাসের লাইনের মাধ্যমে চুলা চলে। গ্যাসের অভিযানে আসলে তাদের কিছু টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই চালাচ্ছি। এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের চন্দ্রা জোনের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. এরশাদ মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।  তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের চন্দ্রা জোনের এক কর্মচারী বলেন, তিতাস যদি চাইতো একদিনেই এই চক্র শেষ হয়ে যেত। কিন্তু মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে কিছু লাইন কেটে দেয়, আবার কয়েকদিন পরই সংযোগ চালু হয়ে যায়। ফলে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে অভিযান কেবল দেখানো মাত্র, প্রকৃতপক্ষে চক্রকে রক্ষা করা হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে অবৈধ সংযোগের কারণে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এর মধ্যে গাজীপুর অন্যতম। বাংলাদেশ গ্যাস আইন, ২০১০ অনুযায়ী অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান রয়েছে। এবং চক্র পরিচালনা বা সহযোগিতা করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে হবে না। মূলহোতাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
Read Entire Article