বাংলাদেশ ক্রিকেটের মাটিতে তার পদচিহ্ন ছড়িয়ে আছে প্রায় সর্বত্র—মিরপুরের উইকেট থেকে শুরু করে বিশ্বকাপের আয়োজন পর্যন্ত। দীর্ঘ ১৬ বছরের যাত্রা শেষে অবশেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানলেন শ্রীলঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা।
শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। সেখানে বিসিবির কর্মকর্তারা তার হাতে স্মারক তুলে দেন কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে। মাঠকর্মী ও সহকর্মীরাও বিদায়ী সহকর্মীকে জানালেন শুভকামনা।
২০০৯ সালে বিসিবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন গামিনি। এরপর থেকে দেশের ক্রিকেটের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ও টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি—৩২টি টেস্ট, ১০৬টি ওয়ানডে ও ৬৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির উইকেট প্রস্তুত করেছেন এই অভিজ্ঞ কিউরেটর। দায়িত্ব পালন করেছেন ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০১৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৬ অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ, তিনটি এশিয়া কাপ ও একাধিক বিপিএল আসরে।
তবে শেষ কয়েক বছর তার জন্য ছিল চ্যালেঞ্জে ভরা। মিরপুরের উইকেট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা, বিশেষ করে ধীর ও স্পিন সহায়ক পিচ নিয়ে ক্রিকেটার ও বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য—সবকিছুই গামিনির কাঁধে বাড়তি চাপ হিসেবে জমা হয়।
যদিও চলতি বছরের জুলাইয়ে বিসিবি তার চুক্তি আরও এক বছর নবায়ন করেছিল, পরে বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও দায়িত্বের সীমাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বিদায় নিতে হচ্ছে গামিনিকে।
বর্তমানে দেশের মাঠ ও উইকেট তদারকির দায়িত্বে আছেন আইসিসির সাবেক কিউরেটর টনি হেমিং, যার যোগদানের পর থেকেই গামিনির কাজের পরিধি ক্রমশ কমে আসে।
১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট মাটির নেপথ্যে থেকে যে মানুষটি একের পর এক আন্তর্জাতিক আসরকে সফলভাবে সাজিয়ে তুলেছিলেন, তার প্রস্থান নিঃসন্দেহে একটি যুগের সমাপ্তি—যে যুগে গামিনি ডি সিলভা ছিলেন মিরপুরের ‘অদৃশ্য কারিগর’।

2 hours ago
6









English (US) ·