গিজারে পানি গরম হতে দেরি হচ্ছে, যা করবেন
শীতের সকালে গিজারের চুলচেরা অপেক্ষা সত্যিই বিরক্তিকর নলের পানি টপটপ পড়ছে, আর আপনি গরম পানির আশায় দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু পানি গরম হতে যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছে, তবে ধরে নিতে হবে গিজারের কোনো না কোনো জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সুখবর হলো এসব সমস্যা অনেক সময় ঘরেই ঠিক করে নেওয়া যায়। এখানে ধাপে ধাপে জানিয়ে দিলাম কী কী পরীক্ষা করবেন এবং কীভাবে সমাধান করবেন। ১. হিটিং এলিমেন্ট নষ্ট বা দুর্বল হয়ে যাওয়াগিজারের পানি গরম করার মূল কাজটি করে হিটিং এলিমেন্ট। সময়ের সাথে সাথে এতে ক্যালসিয়াম, মরিচা বা ময়লা জমে গেলে এটি আগের মতো তাপ উৎপাদন করতে পারে না। ফলে পানি গরম হতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় লাগে। গিজারের পাওয়ার বন্ধ করে নিচের প্যানেল খুলে এলিমেন্টে সাদা আস্তরণ বা জংয়ের দাগ আছে কি না দেখে নিলে সহজেই সমস্যা বোঝা যায়। পরিষ্কার করেও কাজ না হলে নতুন এলিমেন্ট লাগাতে হতে পারে। ২. পানির চাপ কমে যাওয়াগিজারের ভেতরে পানি ঢোকার গতি কম থাকলে গরম হওয়ার সময়ও স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। ইনলেট লাইনে ময়লা জমে গেলে বা বাসার মোট পানির চাপ কমে গেলে এ সমস্যা দেখা দেয়। পাইপের ফিল্টার খুলে পরিষ্কার করলে বা প্রয়ো
শীতের সকালে গিজারের চুলচেরা অপেক্ষা সত্যিই বিরক্তিকর নলের পানি টপটপ পড়ছে, আর আপনি গরম পানির আশায় দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু পানি গরম হতে যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছে, তবে ধরে নিতে হবে গিজারের কোনো না কোনো জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সুখবর হলো এসব সমস্যা অনেক সময় ঘরেই ঠিক করে নেওয়া যায়। এখানে ধাপে ধাপে জানিয়ে দিলাম কী কী পরীক্ষা করবেন এবং কীভাবে সমাধান করবেন।
১. হিটিং এলিমেন্ট নষ্ট বা দুর্বল হয়ে যাওয়া
গিজারের পানি গরম করার মূল কাজটি করে হিটিং এলিমেন্ট। সময়ের সাথে সাথে এতে ক্যালসিয়াম, মরিচা বা ময়লা জমে গেলে এটি আগের মতো তাপ উৎপাদন করতে পারে না। ফলে পানি গরম হতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় লাগে। গিজারের পাওয়ার বন্ধ করে নিচের প্যানেল খুলে এলিমেন্টে সাদা আস্তরণ বা জংয়ের দাগ আছে কি না দেখে নিলে সহজেই সমস্যা বোঝা যায়। পরিষ্কার করেও কাজ না হলে নতুন এলিমেন্ট লাগাতে হতে পারে।
২. পানির চাপ কমে যাওয়া
গিজারের ভেতরে পানি ঢোকার গতি কম থাকলে গরম হওয়ার সময়ও স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। ইনলেট লাইনে ময়লা জমে গেলে বা বাসার মোট পানির চাপ কমে গেলে এ সমস্যা দেখা দেয়। পাইপের ফিল্টার খুলে পরিষ্কার করলে বা প্রয়োজন হলে ছোট একটা বুস্টার পাম্প লাগালে গিজারের ভেতরে পানির প্রবাহ ঠিক থাকে এবং গরম হওয়ার সময়ও কমে যায়।
৩. ট্যাংকের ভেতরে চুনাপাথর জমে থাকা
বিশেষ করে পুরনো গিজারের ট্যাংকের দেয়ালে চুনাপাথর বা ক্যালসিয়াম জমা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এই স্তর গরম হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, কারণ পানি তখন সরাসরি হিটিং কয়েলের সংস্পর্শে আসে না। এ কারণে পানি উষ্ণ হতে আরও বেশি সময় লাগে। ট্যাংক খালি করে ভিনেগার বা ডেসকালার দিয়ে পরিষ্কার করলে এ সমস্যা পুরোপুরি দূর হয়।
৪. থার্মোস্ট্যাট ঠিক মতো কাজ না করা
থার্মোস্ট্যাট গিজারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ভুল তাপমাত্রা রিডিং দিলে গিজার সময়মতো গরম হয় না। কখনো গরম কম হয়, কখনো তাপমাত্রাই বাড়ে না। তাপমাত্রা সেটিং ৬০-৭০ ডিগ্রির মধ্যে রেখে পরীক্ষা করে দেখা উচিত। তবুও সমস্যা থাকলে থার্মোস্ট্যাট পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
৫. বিদ্যুতের লাইন দুর্বল বা কানেকশন লুজ থাকা
গিজার ঠিকমতো গরম হতে পর্যাপ্ত ভোল্টেজ প্রয়োজন। যদি বিদ্যুতের লাইন দুর্বল হয় কিংবা প্লাগ বা সুইচে লুজ কানেকশন থাকে, তাহলে গিজার প্রয়োজনীয় ক্ষমতায় কাজ করতে পারে না। এতে পানি গরম হতে স্বাভাবিকের চেয়ে দেরি হয়। বোর্ড বা প্লাগে পোড়া দাগ, স্পার্ক বা গরম হয়ে যাওয়ার লক্ষণ থাকলে কানেকশন শক্ত করে নিলেই সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
৬. গিজারের ক্যাপাসিটি কম হয়ে যাওয়া
অনেকেরই ধারণা থাকে গিজার ঠিক আছে কিন্তু পানি দেরি করে গরম হচ্ছে। বাস্তবে দেখা যায় ব্যবহারের তুলনায় গিজারের ধারণক্ষমতা কম। ছোট গিজার দিয়ে লম্বা সময় শাওয়ার নিলে বা পরিবারের সদস্য বেশি হলে গিজারকে বার বার বেশি পানি গরম করতে হয়, ফলে সময় বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ ক্যাপাসিটির গিজার নেওয়া বা আগে থেকে গিজার অন করে রাখা সহায়ক হতে পারে।
৭. সেফটি ভাল্ভ আটকে যাওয়া
গিজারের সেফটি ভাল্ভ ট্যাংকের অতিরিক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আটকে গেলে বা ময়লা জমলে পানি গরম হওয়ার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং ট্যাংক পর্যাপ্ত চাপ ধরতে পারে না। ভাল্ভ খুলে পরিষ্কার করে নিলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা দূর হয়। খুব পুরোনো ভাল্ভ হলে কম খরচে নতুনটি লাগানো উচিত।
আরও পড়ুন
যেসব লক্ষণে বুঝবেন গিজার বদলানোর সময় হয়েছে
শীতে হিটার ছাড়াই ঘর গরম রাখতে পারবেন যেভাবে
কেএসকে/জেআইএম
What's Your Reaction?