ঘরে ৩ সন্তান রেখে কাজে যান বাবা-মা, ফিরে দেখেন...
আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা দম্পতি তিন বছর ধরে ভাড়া থাকেন রাজধানীর কড়াইল বস্তির একটি ঘরে। তাদের সংসারে রয়েছে তিন শিশুসন্তান। বড় ছেলে রাতুলের বয়স ১১ বছর। তার ছোট আরও দুজন। প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবারও আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা দম্পতি সকালে কাজে বেরিয়ে যান। বিকেলে হঠাৎ তারা খবর পান কড়াইল বস্তিতে আগুন লেগেছে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তাদের তিন সন্তান আগুনের ভয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। তারা কোন দিকে যাবে দিশা পাচ্ছে না। সবাই তখন নিজের জীবন নিয়ে নিরাপদ দূরত্বের দিকে ছুটছিলেন। এমন দৃশ্য দেখে মুহূর্তেই তিন ছেলেমেয়েকে কোলে নিয়ে কড়াইল বস্তি এলাকা ছাড়েন আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা। প্রায় ১০ মিনিট দৌড়ে আশ্রয় নেন বনানী ১১ নম্বর রোডের সেতুর পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন লাগার ঘটনায় বনানী ১১ নম্বর রোডে আরও শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দু-তিনজন করে শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের অনেকে পেটের ক্ষুধায় কান্না করছিল। কিন্তু প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরা অধিকাংশ অভিভাবকের পকেটে সন্তানকে খাবার কিনে দেওয়ার মতোও টাকা নেই। ফলে ক্ষুধার্ত সন্তানের মুখে তারা খাবার তুলে দিতে পার
আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা দম্পতি তিন বছর ধরে ভাড়া থাকেন রাজধানীর কড়াইল বস্তির একটি ঘরে। তাদের সংসারে রয়েছে তিন শিশুসন্তান। বড় ছেলে রাতুলের বয়স ১১ বছর। তার ছোট আরও দুজন।
প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবারও আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা দম্পতি সকালে কাজে বেরিয়ে যান। বিকেলে হঠাৎ তারা খবর পান কড়াইল বস্তিতে আগুন লেগেছে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তাদের তিন সন্তান আগুনের ভয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। তারা কোন দিকে যাবে দিশা পাচ্ছে না। সবাই তখন নিজের জীবন নিয়ে নিরাপদ দূরত্বের দিকে ছুটছিলেন।
এমন দৃশ্য দেখে মুহূর্তেই তিন ছেলেমেয়েকে কোলে নিয়ে কড়াইল বস্তি এলাকা ছাড়েন আজিজুর রহমান ও আঞ্জুমারা। প্রায় ১০ মিনিট দৌড়ে আশ্রয় নেন বনানী ১১ নম্বর রোডের সেতুর পশ্চিম পাশের ফুটপাতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন লাগার ঘটনায় বনানী ১১ নম্বর রোডে আরও শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দু-তিনজন করে শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের অনেকে পেটের ক্ষুধায় কান্না করছিল। কিন্তু প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরা অধিকাংশ অভিভাবকের পকেটে সন্তানকে খাবার কিনে দেওয়ার মতোও টাকা নেই। ফলে ক্ষুধার্ত সন্তানের মুখে তারা খাবার তুলে দিতে পারছেন না।
জানতে চাইলে আঞ্জুমারা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগুন দেখে শুধু বাচ্চাগুলোরে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছি। সঙ্গে আর কিছুই আনতে পারিনি। আগুনে ঘরের মালামাল সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কী খাবো, কোথায় থাকবো, কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।’
বনানী ১১ নম্বর রোড ছাড়াও গুলশান লেকের দুই পাশের রাস্তা ও ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছেন আরও বহু পরিবার। তাদের অধিকাংশই ঘর থেকে কোনো মালামাল নিয়ে বের হতে পারেননি। আবার অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে রেখে, যেসব ঘর এখনো অক্ষত আছে সেগুলো থেকে মালামাল বের করার চেষ্টা করছেন।
আশরাফুল ও সোনিয়া দম্পতি দুই বছর ধরে করাইল বস্তিতে তিন হাজার টাকা দিয়ে একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। এর মধ্যে আশরাফুল রাজমিস্ত্রি আর সোনিয়া বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। আগুন লাগার সময় তাদের ঘরে সাত বছরের পুত্রসন্তান ছিল।
আগুন লাগার খবর পেয়ে আশরাফুল ঘরে ছুটে যান। ছেলেটাকে কোলে নিয়ে এবং ঘরে থাকা একটি ২১ ইঞ্চি টেলিভিশন নিয়ে কোনোরকম বের হয়ে আসতে পারেন।
জানতে চাইলে আশরাফুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাসার পাশে একটি ভবনে কাজ করছিলাম। হইচই শুনে গিয়ে দেখি, আমাদের ঘরের পাশের বাসায় আগুন লেগেছে। এক মুহূর্ত দেরি না করে ছেলেকে কোলে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। আগুনে আমাদের ঘরটি সম্পূর্ণ পড়ে গেছে। এখন রাতে কী খাবো, কোথায় থাকবো, ভেবে কূল পাচ্ছি না।’ এই কঠিন দুঃসময়ে তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
এমএমএ/এমকেআর/এমএস
What's Your Reaction?