চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় একের পর এক আহতদের আনা হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দুপুর তিনটা পর্যন্ত ৫০ জনকে ভর্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া অনেকের মাথা শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদের শরীরে বেধড়ক পেটানোর চিহ্নও রয়েছে। আহতদের মধ্যে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীর সঙ্গে পথচারীও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিফতা জাগো নিউজকে বলেন, কদমতলী এলাকায় আন্দোলনকারীদের অনেককে ছুরিকাঘাত করা হয় প্রকাশ্যে। ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়। তাদের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে নালায় ফেলে দেওয়া হয়।
রেড ক্রিসেন্টের যুব সদস্য তাহমিদ উদ্দিন বলেন, আহতদের অনেকে গুলিবিদ্ধ। হতাহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রামে তাদের ৩০ জনের টিম কাজ করছে।
চমেক ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে দুই ছাত্রীসহ ৬ জন আহত ভর্তি আছে বলে জানা গেছে।
হামলায় ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মিজানুর রহমান, দেশ রুপান্তরের ফটো সাংবাদিক আকমল হোসাইনসহ আরও অনেক সংবাদ কর্মী আহত হয়েছেন।
আজ সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা নিউ মার্কেট মোড়ে অবস্থান নিলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিটি কলেজ এলাকা থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় ছাত্রলীগ।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর আন্দোলনকারীরা নিউমার্কেট ও রেয়াজউদ্দিন বাজারের আশপাশে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বলে অভিযোগ করছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
জাগো নিউজের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সিটি কলেজ রোডের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অফিসের পেছন থেকে রিভলবার হাতে গুলি ছুড়ছে হেলমেট পরা এক লোক। তার পাশে থাকা আরেকজনকে ককটেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রিভলবার হাতে ওই ব্যক্তি হলেন সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা মো. ফয়সাল।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১২.৪৫ পর্যন্ত এসএস খালেদ রোডে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আবছার উদ্দিন।
ঘটনার সময় স্থানীয় জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের নেতৃত্বে শটগান ও পিস্তল হাতে দুই অস্ত্রধারীকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় অংশ নিতে দেখা যায়।
এদিকে রোববার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে পটিয়া মাদরাসার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তবে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পটিয়াতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় যুবলীগ ক্যাডাররা জমির শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।
এএজেড/এমআরএম/এএসএম