চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত দুই শিক্ষার্থী সমাজতত্ত্ব বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মামুন মিয়া এবং অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের চিকিৎসা চলছে চট্টগ্রাম নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মু. ইসমাঈল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম এই দুই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথার খুলি খুলে ফ্রিজে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’। চার দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মামুনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছে।
- আরও পড়ুন
- আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর হস্তক্ষেপ মেনে নেব না
- চবিতে সংঘর্ষ: মামলায় ‘উসকানিদাতা’ সাবেক বিএনপি নেতা উদয় কুসুমের নাম নেই
অপর শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের জ্ঞান পাঁচ দিনেও ফেরেনি। তার চেতনার মাত্রা (কনশাস লেভেল) ৫ থেকে ৯-এর মধ্যে ওঠানামা করছে। একটি সুস্থ মানুষের কনশাস লেভেল হয় ১৫। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তার রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা রয়েছে, সুস্থ হতে সময় লাগবে।
আহত দুই শিক্ষার্থীর চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মু. ইসমাঈল হোসেন শনিবার বোর্ড মিটিং শেষে বলেন, আহত ছাত্র মামুনের অবস্থা এখন স্থিতিশীল ও শঙ্কামুক্ত। আর দুয়েকদিন অবজারভেশন শেষে তাকে আমরা ডিসচার্জ দেব এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুইমাস পর মাথার খুলি প্রতিস্থাপন করে দেব। ইমতিয়াজ সায়েম এখনো লাইফ সাপোর্টে থাকলেও নিউরোলজিকাল এবং অন্যান্য প্যারামিটারে ওর দিনদিন উন্নতি হচ্ছে।
- আরও পড়ুন
- চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসনের ১০ সিদ্ধান্ত
- চবিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: শিক্ষার্থীদের ‘উসকে’ দেন বাগছাস নেতারা, হামলায় আ’লীগ-ছাত্রলীগ
ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম সম্পর্কে এই চিকিৎসক জানান, তার জ্ঞান পাঁচ দিনেও ফেরেনি। চেতনার মাত্রা (কনশাস লেভেল) ৫ থেকে ৯-এর মধ্যে ওঠানামা করছে। আজকে তার জ্ঞানের মাত্রা ছিল ১২। একটি সুস্থ মানুষের কনশাস লেভেল হয় ১৫। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তার রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা রয়েছে, সুস্থ হতে সময় লাগবে।
আহত শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, মামুন কথা বলতে পারছে। তবে আমরা এখনও শঙ্কামুক্ত নই। ভালো হলেও তার ভবিষ্যত নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
পাঁচদিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকা ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ বেগম হাসপাতালে দিনরাত আহাজারি করে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে ছেলের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া চেয়েছেন।
- আরও পড়ুন
- মাথায় ব্যান্ডেজ, খুলি ফ্রিজে, এখন কেমন আছেন চবি ছাত্র মামুন?
- ৪ ঘণ্টার অপারেশনের পর লাইফ সাপোর্টে চবি শিক্ষার্থী মামুন
এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে এখনও বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সীমিত আকারে ক্লাস চললেও রোববার থেকে পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণ ফিরে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের। সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আট গ্রামবাসীর জামিন মেলেনি। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়াদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এমআরএএইচ/এসএইচএস/এএসএম