চলতি বছর বিতরণ হবে ৩৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ

6 days ago 8

সরকার চলতি বছর কৃষিখাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।

সচিব বলেছেন, ‌‘আমাদের অনেক উদ্যোক্তা আছেন, যারা সহায়তার কথা বলেন। তাদের জন্য সরকার এ বছর কৃষি খাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেবে। এখন আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো প্রকৃত উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাদের সহায়তা প্রয়োজন। আমরা তাদের সহায়তা করার চেষ্টা করবো।’

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব এসব কথা বলেন। সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ সেমিনার হয়।

কৃষি সচিব জানান, আলুচাষিদের সহায়তার জন্য সরকার এবারই প্রথম হিমাগার ফটকে আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া সরকার এবারই প্রথম ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পায় তাহলে সরকারের তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

এমদাদ উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের আজকের তরুণ শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের অপার সম্ভাবনাময় সম্পদ। এই সম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’

সচিব আরও জানান, এই প্রথম কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ বছর মেয়াদি একটি কর্মকৌশল প্রণয়নে কাজ করছে। এর লক্ষ্য ২০৫০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা।

বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার করিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বিএআরসির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সদস্য পরিচালক এবং ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. মোশাররফ উদ্দিন মোল্লা।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএআরসির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং এপিসিইউ-বিএআরসি পার্টনার প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (এইচআরডি) মো. আব্দুস সালাম।

সেমিনারে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএআরসির কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, বিভিন্ন এনজিও এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিসহ প্রায় ৫০০ জন অংশ নেন।

সেমিনারে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে তরুণদের উৎসাহিত করতে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ১১ উদ্যোক্তার সফলতার গল্প উপস্থাপন করা হয়। তাঁরা হলেন- মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ (কফি চাষ সম্প্রসারণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ), শাহীদা বেগম (পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), আব্দুল হালিম (নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), মো. মোবারক হোসেন (মধু উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), মো. মিলন মিয়া (জৈব সার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), মো. ইসমাইল (নিরাপদ শুঁটকি মাছ উৎপাদন), আল মামুন (রঙিন মাছ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), মো. তাজাম্মুল হক (প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনী সেবা), মো. নাজমুস সাকিব (টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি বিস্তার), কাজী কাওসার হোসেন প্রিতম (গবাদিপ্রাণী হৃষ্টপুষ্টকরণে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ব্যবস্থাপনা) এবং মো. রেজওয়ানুল ইসলাম (অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা)।

এনএইচ/একিউএফ/জেআইএম

Read Entire Article