চাঁদা না পেয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে খাদিজা নামের ফিলিপাইনের এক নাগরিক ও তার স্বামী-শাশুড়িকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় কয়েক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই ফিলিপাইন নাগরিকের স্বামী ইঞ্জিনিয়ার রেদাওয়ানুর রহমান।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার কাকিনা বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
লাঞ্ছিতের শিকার ওই ফিলিপাইন নাগরিক খাদিজা বেগম জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী রেদাওয়ানুর রহমানের (২৮) স্ত্রী।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফিলিপাইন নাগরিক খাদিজাকে নিয়ে প্রথমবারের মতো গ্রামের বাড়ি আসেন প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার রেদওয়ানুর রহমান। গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মা হামিদা বেগমের চিকিৎসার জন্য রংপুরে যান তারা। চিকিৎসা শেষে অসুস্থ মাকে নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে সিএনজিযোগে বাড়ি ফিরছিলেন ফিলিপাইন নাগরিক খাদিজা ও স্বামী রেদাওনুর রহমান। পথিমধ্যে কাকিনা বাজার এলাকায় আসলে কয়েকজন শ্রমিক নেতা তাদের সিএনজি পথরোধ করে চাঁদা দাবি করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করলে ইঞ্জিনিয়ার রেদাওয়ানুর, তার অসুস্থ মা ও স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করেন তারা। এর এক পর্যায়ে সিএনজিচালককে মারধর করেন অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়রা এসে প্রতিবাদ করলে সটকে পড়েন অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার রেদাওয়ানুর রহমান বলেন, অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা শেষে ফিলিপাইন নাগরিক স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। পথিমধ্যে কয়েকজন লোকজন এসে সিএনজি আটক করে চাঁদা দাবি করে। আমি তার প্রতিবাদ জানাই। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। অসুস্থ মায়ের কথা বলেও তাদের কাছ থেকে রেহাই মেলেনি। সেসময় আমি সেসব মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গেলে আমার ওপর চড়াও হয়ে ফোন কেড়ে নেয়। অতঃপর তারা সিএনজিচালিত অটো রিকশাচালককে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। তবে এখন অবধি এ ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নিতে চোখে পড়েনি। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রেদাওয়ানুরের মা হামিদা বেগম বলেন, লোকগুলো সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটক করেই খারাপ ব্যবহার শুরু করে। আমার ছেলে তাদের অনুরোধ করেছে যে, আমার মা অসুস্থ যেতে দেন। তবু তারা একটুও দয়া করেনি। উলটো আমার ছেলের ওপর চড়াও হয় এবং সিএনজিচালককে মারধর শুরু করে।
এ বিষয়ে ফিলিপাইন নাগরিক খাদিজা বলেন, আমি প্রথমবারের মতো আমার স্বামীর জন্মভূমি বাংলাদেশে আসি। কিন্তু এসেই যা পেলাম তাতে আর এদেশে আসার আর কোনো ইচ্ছে নেই। ঘটনার সময় যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।