চাকরির অনিশ্চয়তায় খুবির নিরাপত্তা কর্মীরা, বঞ্চিত মৌলিক সুবিধা থেকে

2 months ago 28

দীর্ঘদিন ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করলেও এখনো চাকরির স্থায়িত্ব, ন্যায্য পারিশ্রমিক কিংবা ওভারটাইম ভাতা পাচ্ছেন না অনেক প্রহরী। মাস্টাররোল ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োজিত কর্মীরা বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করেও রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নিরাপত্তা বিভাগে মোট ১০৬ প্রহরী দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে ৮৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব, সাতজন আনসার এবং ১১ জন মাস্টাররোলভুক্ত প্রহরী। মাস্টাররোলের মধ্যে তিনজন থোক বরাদ্দ পান। এছাড়া আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োজিত কর্মীদের অনেকেই রয়েছেন, যারা প্রায় ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৬ জন নিরাপত্তা প্রহরীর মধ্যে ঈদের ছুটি পেয়েছেন মাত্র ১৬ জন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটসোর্সিং ও মাস্টার রোলের ১৭ জন সদস্যের কেউ ঈদ উপলক্ষে কোনো ছুটি পাননি। তারা মোট ৮৯ জন ৩টি শিফটে কাজ করেন। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট, দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা এবং রাত সাড়ে ১০টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বে আছেন।

মাস্টাররোলভুক্ত নিরাপত্তা কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও আমাদের স্থায়ী কারার কোনো পরিকল্পনা নেই। বিগত দিনে আমাদের অগ্রাধিকার না দিয়ে বাইরে থেকে এনে অনেককে স্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদেরও স্থায়ী করা হবে।

ঈদের ছুটি না পাওয়া মাস্টাররোলের একজন নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, সাড়ে তেইশ বছর ধরে এই চাকরি করছি। একটা ঈদও পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারিনি। ঈদের দিনও ক্যাম্পাস পাহারা দিতে হয়। এখন আর বাড়ি থেকে কলও আসে না।

কর্মীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, অথচ ওভারটাইম ভাতা সেভাবে দেওয়া হয় না। এক কর্মীর ভাষায়, বেসিক বেতনের ভিত্তিতে যদি ওভারটাইম হিসাব করে দেওয়া হতো তাহলে কিছুটা সচ্ছলতা আসত। পরিবার চালিয়ে মাস শেষে কিছুই হাতে থাকে না। তারা আরও বলেন, এক মাসের কাজ করিয়ে ২৬ দিনের বেতন দেওয়া হয় আর চার দিনের জন্য এক হাজার দেওয়া হয়। 

গত উপাচার্যের সমালোচনা করে তারা আরও বলেন, করোনার সময় ২০২১ সালের তিন মাসের ওভারটাইমের বকেয়া টাকা এখনো আমরা পাইনি। 

আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োজিত এক প্রহরী অভিযোগ করেন, তাকে চাকরিতে নিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি প্রায় তিন লাখ টাকা নিয়েছে। শুরুতে বলা হয়েছিল চাকরিটি স্থায়ী হবে কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তিনি চান, ভবিষ্যতের নিয়োগে, আগে থেকে নিয়োজিত কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।

তদারক কর্মকর্তা জয়নাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কাছে আমানত। দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা করি না।

নিরাপত্তা শাখার তত্ত্বাবধায়ক আব্দুর রহমান বলেন, জনবল সংকটে আমাদের অতিরিক্ত চাপ নিতে হয়। আরও ২০-২৫ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিলে কাজের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হতো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের সমস্যা সম্পর্কে অবগত আছি। এখন স্থায়ী নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। একটু সময় নিয়ে সব করা হবে। যাদের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের সময় বাড়ানো হবে।

Read Entire Article