প্রায় ১০ বছর আগে খুলনায় খুন হন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হাজী শহিদুল ইসলাম ওরফে হুজি শহীদ। আর সেই খুনের বদলা নিতে বিধবা নারীকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম রাব্বানী টিপুকে গুলি করে হত্যা করেন তার ভাতিজা শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৭)।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কক্সবাজার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ।
টিপু হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে তাদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তি মতে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ান মোল্লাপাড়া গ্রামের আক্কাস আলী সড়কের মো. সেলিম আকনের মেয়ে ঋতু (২৪), একই গ্রামের পাবলা হাজী পাড়া গ্রামের মো. জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৭), খুলনা সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসুল (২৫)।
পাপ্পুর বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় অস্ত্র, হত্যা ও মাদক আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর গোলাম রসুলও একই থানার একটি মামলার আসামি।
উদ্ধার করা আলামতের মধ্যে রয়েছে, মেড ইন ইউএস এ লেখা বাটের দুপাশে কাট সংযুক্ত একটি ইউআরও পিস্তল, চারটি কার্তুজ, একটি ম্যাগাজিন ও একটি কালো রঙের ট্রাভেল ব্যাগ।
সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ৮ জানুয়ারি রাত ১১ টার বাসে খুলনা থেকে কাউন্সিলর টিপু কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। পরদিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার সৈকতের সিগাল পয়েন্ট ঝাউবন সমেত ফুটপাতে ভিকটিম টিপুর মাথায় গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে মামলা করেন।
এসপি জানান, ঘটনার পরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ারের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতারের জন্য কাজ শুরু করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর সার্কেল নেতৃত্বে আভিযানিক টিম মৌলভীবাজারের জুড়ি থানা থেকে নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পরে আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে কক্সবাজারের কলাতলী রোডের কক্স কুইন রিসোর্টের একটি কক্ষের চিলেকোঠা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও হুজি নেতা শহীদ হত্যার বদলা নিতে টিপুকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি। এই হত্যাকাণ্ডে ঋতুকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর গুলি করেন হুজি শহীদের ভাতিজা পাপ্পু। এছাড়া এতে অস্ত্র সরবরাহ পলায়নে সহযোগিতা করাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেন হুজি শহীদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত গোলাম রসূলসহ কয়েকজন।
সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/জিকেএস