চাপা কষ্টে তরমুজ চাষি, বিক্রেতার অট্টহাসি

1 day ago 7

কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর মাঠ থেকে বাজারে যায় তরমুজ। কিন্তু হাত ঘুরলেই বেড়ে যায় তরমুজের দাম। ১৫০ টাকার তরমুজ বাজারে বিক্রি হয় ৬০০ টাকা। মৌসুমের প্রথম ফসল হিসেবে বাজারে এলেও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, খুচরা বিক্রেতারাই দাম বাড়ান, যা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

কৃষক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা—চার হাত ঘুরে চারগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। সাধারণত কৃষকদের কাছ থেকে তরমুজ কেনেন পাইকাররা। কখনো ক্ষেত চুক্তিতে, কখনো পিস হিসেবে। ক্ষেত থেকে পিস হিসেবে কেনা তরমুজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয় আড়তদারের কাছে।

ক্ষেত থেকে কৃষক প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি করেন ১৫০ টাকা। পাইকার ও আড়তদার সেটি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন ১০০-৩০০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা ৩০০ টাকার তরমুজ বিক্রি করেন ৫০০-৭০০ টাকা। তারা লাভ করেন শতকরা ৬০-১৩০ ভাগ। আড়তদার আর খুচরা বিক্রেতারা দ্বিগুণ লাভ করলেও ন্যায্যমূল্য পান না কৃষক। সিন্ডিকেটের গ্যারাকলে ভোক্তারা কিনতে বাধ্য হন চড়া দামে।

কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী, কৃষক থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লাভ করা যাবে। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা ৬০-১৩০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করেন। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। যদিও সার ও কীটনাশকের দাম বাড়তি। শ্রমিক খরচ, খাবার খরচ সবকিছুই বেশি। ফলে কৃষকেরা সব সময় লসেই থাকেন।

তরমুজ পাকার সময় হলে পাইকাররা কৃষকের জমি কেনেন। পরে সংগ্রহ, পরিবহন ও খাজনাসহ একেকটি তরমুজ ২০০ টাকার মতো খরচ পড়ে। যা গড়ে ২২০ টাকায় আড়তদারের কাছে বিক্রি করেন। এ বছর দাম মোটামুটি ভালো। বাজারে চাহিদাও স্বাভাবিক। বড় তরমুজের চেয়ে মাঝারি ও ছোট তরমুজের চাহিদা বেশি। বর্তমানে ১০০-২৫০ টাকায় তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারে তরমুজের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে আগাম তরমুজ ছাড়া সব রকমের তরমুজ এখনো আসেনি। তাই দাম একটু বেশি। তবে তরমুজ ভালো হলেও তাদের, মন্দ হলেও তাদের। বিক্রির সময় ক্রেতারা খারাপটা আর নেন না।

অনেক ক্রেতার অভিযোগ, এখন তরমুজের ভরা মৌসুম। বাজারেও পর্যাপ্ত তরমুজ আছে। কিন্তু দামের দিক থেকে সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। তরমুজ এখন ভোগ্যপণ্য নয়, বিলাসি পণ্য হয়ে গেছে। কৃষি বিপণন বিধি অনুযায়ী, তরমুজের ক্ষেত্রে উৎপাদনের পর থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে ৩০% লাভ করতে পারবেন। তবে বাজারে কিছু অসঙ্গতি আছে, যা নিয়মিত তদারকি করা জরুরি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে গেলে দাম ঠিক থাকে। তারা চলে এলেই আবার দাম বেশি রাখার চেষ্টা করে। ভোক্তারা সচেতন না হওয়ায় সুযোগটা ব্যবসায়ীরা নিচ্ছে। তাই দরকার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা।

এসইউ/জেআইএম

Read Entire Article