চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত
ঈদে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত দেশের পর্যটনশিল্পের সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল। এখানকার নয়নাভিরাম প্রাকৃতির সৌন্দর্য আর জীববৈচিত্র ভ্রমণ পিপাসু দেশি-বিদেশী পর্যটকদের হাতছানি দেয় সমগ্র বছর জুড়েই।
এবারের ঈদে হাজারো পর্যটকদের জন্য সেজেছিল এই পর্যটন নগরীর প্রতিটি দর্শনীয় স্থান। নান্দনিক হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ এবং গেস্ট হাউজে ছিল দেশী-বিদেশী পর্যটকদের স্বাভাবিক যাতায়াত প্রবাহ।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চা বাগান ঘেরা দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি একাত্তর ঘিরে ছিল স্থানীয় জনসাধারণ এবং শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কোলাহল। সেই সঙ্গে পাশেই ফিনলে টি কোম্পানির চা বাগানের পাশেও ছিল অসংখ্য দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। কেউ পরিবারসহ ছবি তুলতে ব্যস্ত, আর শিশুরা নিজের আনন্দে ঘোরাঘুরিতে ব্যস্ত।
শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের কমলগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানেও ছিল বিভিন্ন বয়সের মানুষের উপস্থিতি, প্রকৃতির কাছাকাছি আসতে পেরে অনেকেই ছিলেন উৎফুল্ল মেজাজে।
বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় উদ্যান এবং চিরহরিৎ বনের দুই পাশের সারি সারি বৃক্ষরাজি যেন মানুষকে নিশ্বাস নিতে বাড়তি অক্সিজেন যোগ করছে। সেই সঙ্গে একদল উন্মুক্ত বানরের দল পর্যটকদের আকৃষ্ট করে বাড়তি আনন্দ যোগ করছে।
সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটক পুতুল রানী সূত্রধর জানান, আমরা ঈদের ছুটি থাকায় পরিবারসহ শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে এসেছি, আজ চা বাগান এবং কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনসহ অনেক জায়গাতে ঘুরেছি। এখানে অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশ কিন্ত লাউয়াছড়া বনে আমাদের মনে হয়েছে পর্যাপ্ত পানির ব্যাবস্থা কিংবা শৌচাগারের অপ্রতুলতা রয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য আরো বেশি সুযোগ নিশ্চিত করার প্রয়োজন ছিল।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক মো. মনির হোসেন জানান, শ্রীমঙ্গল আমাদের এর আগেও আসা হয়েছে। এখানকার সৌন্দর্য, বছরে একেক সময় একেক রকম, বিশেষ করে শীতে আমরা এখানে অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি রিসোর্টে রাত্রিযাপন করেছি বন্ধুদের সঙ্গে, এবার ঈদের ছুটিতে আবার শ্রীমঙ্গল ঘুরতে আসলাম, ভালোই লাগছে সবাই একসঙ্গে আসতে পেরে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ী মো. সেলিম আহমেদ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের জন্য আমাদের গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টসহ অসংখ্য হোটেল রিসোর্টে, কটেজে পর্যটকদের জন্য বাড়তি আয়োজন করা হয়েছে, সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়, আশা করছি পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলে নিরাপদ ভাবেই ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে পারবেন।
শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী কালবেলাকে জানান, ঈদে শ্রীমঙ্গল এবং কমলগঞ্জে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা বাড়তি টহলের ব্যাবস্থা করছি, যাতে পর্যটকদের স্বাভাবিক যাতায়াত বিঘ্নিত না হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি স্থানে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আমাদের তদারকিও রয়েছে।