চার দিন ধরে বন্ধ সঞ্চয়পত্র বিক্রি, ভোগান্তিতে গ্রাহক

2 hours ago 4

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার আপগ্রেশনের কাজ চলমান রয়েছে। এতে বন্ধ আছে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অনেক গ্রাহক এসেছেন সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য। অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছেন। হেল্পডেস্ক থেকে ফর্ম পূরণে সহায়তা করা হলেও সার্ভার চালুর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানানো হচ্ছে আগতদের।

তবে অধিদপ্তর বলছে, সার্ভার আপগ্রেশনের কাজ চলমান। এতে সাময়িক বন্ধ রয়েছে বিক্রি। সোমবার দুপুরের পর থেকে আবারও আগের মতোই সেবা পাবেন গ্রাহকরা।

শাহ আলম নামে একজন গ্রাহক বলেন, আমি আগে থেকে কোনো বার্তা পাইনি। এর আগেও আমার সঞ্চয়পত্র কেনা রয়েছে। নতুন করে পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছি কিন্তু জমার দেওয়ার জন্য দুই দিন ধরে ঘুরছি। কোন তথ্যও পাচ্ছি না কবে নাগাদ সার্ভার ঠিক হবে। ব্যাংকের গ্রাহককে মোবাইলে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু অধিদপ্তর আমাদের জানায় নাই। এ কারণে গতকালের মতো আজও ঘুরছি।

সাবেহা সুলতানা এসেছেন ফর্ম নিতে। তিনি বলেন, মেয়ে ও ছেলের বউয়ের নামে কিছু সঞ্চয়পত্র কিনবো। গত বৃহস্পতিবার এসেছিলাম বলেছিল সার্ভার ডাউন, আজও এলাম বলে সার্ভার ডাউন। কবে সার্ভার ঠিক হবে এটা জানাতে পারছেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা, আমরাও আশা নিয়ে এসেছি সার্ভার ঠিক হবে বলে।

বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের এক অতিরিক্ত পরিচালক জানান, গত বুধবার থেকে সার্ভার ডাউন আছে। কবে ঠিক হবে, আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। সার্ভার ঠিক হলে সবাই সেবা পাবেন। তবে সার্ভার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ফর্ম নিতে পারছেন, তবে জমা হচ্ছে না। কেউ চাইলে কাউন্টারে রেখে দিতে পারেন, সার্ভার ঠিক হলে আমরা জমা করে নিবো। সার্ভার ঠিক হওয়া অধিদপ্তরের কাজ, বলছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) এবং উপসচিব মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, সার্ভার আপগ্রেশনের কাজ বৃহস্পতিবার থেকে চলছে। কাজ সম্পন্ন হয়েছে, দুপুর ১২টার পর থেকে চালু হবে। সবাই সেবা নিতে পারবেন বলে আশা করছি।

অন্যদিকে চলতি মাস থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়ছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর (স্কিমের ধরন অনুযায়ী) মুনাফার হার বেড়ে হতে যাচ্ছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বুধবার (৮ জানুয়ারি) বর্ধিত হার নির্ধারণের আদেশ জারি করতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (আইআরডি) অনুরোধ করে। অর্থ বিভাগের তৈরি এ বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মুনাফার এ হার ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থাৎ বর্ধিত হারের কারণে কোনো সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১২ শতাংশের কম হবে না। সবচেয়ে কম মুনাফা (১২.২৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের বিপরীতে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা (১২.৫৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। সুদহার পরিবর্তনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ধাপেও পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে পাঠানো চিঠিতে। বর্তমানে ১৫ লাখ টাকা; ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ ১ টাকার বেশি, এই তিন ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে আলাদা মুনাফার হার রয়েছে। তবে নতুন নিয়মে দুটি ধাপের কথা বলা হয়েছে। একটি ধাপে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা। আর অপর ধাপে এর ওপরের বিনিয়োগকারীরা থাকবেন।

ইএআর/এসআইটি/জিকেএস

Read Entire Article