‘চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির বিকল্প নেই’

2 hours ago 5

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করতে হলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির বিকল্প নেই।

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইউনানি আয়ুর্বেদিক গ্র্যাজুয়েট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আগড্যাব) আয়োজিত এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ যদি স্বল্প ব্যয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে পারে, তবে আমরা কেন পারব না? আমরা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি, অথচ স্বাস্থ্য খাতটিকে উন্নত করতে পারছি না। স্বাস্থ্য খাতে আমাদের দৈন্য বিপুলসংখ্যক রোগীর দেশের বাইরে চলে যাওয়া থেকেই বোঝা যায়। আমাদের পাশের দেশ বাংলাদেশি রোগীদের আকৃষ্ট করতে কলকাতাসহ অন্যান্য শহরে বিশেষ ব্যবস্থা করে রেখেছে।

এ ছাড়া তিনি বলেন, বাংলাদেশের রোগীদের টার্গেট করে উন্নত মানের হাসপাতাল গড়ে তুলছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের সরকারি ও বেসরকারি খাত দেশে রোগী ধরে রাখার মতো কার্যকর কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছে না। বরং রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের নেতিবাচক আচরণ, সেবার পরিবর্তে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুল চিকিৎসা দিয়ে রোগীর আস্থা নষ্ট করে ফেলছে। বেশিরভাগ চিকিৎসক রোগীর আস্থা অর্জনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা পেশাটাকে সেবার পরিবর্তে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। এ প্রবণতাই রোগীদের বিদেশমুখী করে তুলেছে।

একটি জরিপের তথ্য তুলে ধরে কাদের গণি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী রোগীদের ৫৩ শতাংশ বিদেশ যান মূলত রোগ নির্ণয় বা চেকআপের জন্য। যত রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান তার ৫ শতাংশ চিকিৎসক। চিকিৎসার জন্য বিশ্বের যেসব দেশের মানুষ বিদেশে বেশি যায় সেই তালিকার দশম স্থানে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, বলা হয় বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ভারতে সবচেয়ে বেশি রোগী যায় হৃদ‌রোগের অস্ত্রোপচারে। সারা দেশে ৩৪টি কেন্দ্রে হৃদ‌রোগের অস্ত্রোপচার হয়, এর মধ্যে ২৬টি কেন্দ্রই ঢাকা শহরে। দেশের ৯৫ শতাংশ অস্ত্রোপচার হয় ঢাকায়। সারা দেশে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা থাকলে পরিস্থিতি এমন হতো না।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে গণ্য করতে হবে। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় আধুনিক মেডিকেল ইকুইপমেন্টসহ দক্ষ টেকনিশিয়ান গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসকদের ব্যবসার পরিবর্তে সেবামনস্ক হতে হবে এবং রোগীর সেবা মুখ্য হয়ে উঠতে হবে।

চিকিৎসকদের উদ্দেশ করে কাদের গণি বলেন, চিকিৎসকের অ্যাপ্রোন পরার সৌভাগ্য সবার হয় না। এই অ্যাপ্রোনের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।

আগড্যাব সভাপতি ডা. মির্জা লুৎফর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন- ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম সচিব শফিউল আলম, ডা. আবু জাহের, ডা. গাউছুল আজম চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আগড্যাব মহাসচিব ডা. আমিনুল বারি কানন।

Read Entire Article