চিন্ময় দাসের জামিন না দেওয়ায় সনাতনী জাগরণ জোটের সংবাদ সম্মেলন

1 day ago 6

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন প্রদান না করায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের অন্যতম প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় ও প্রসেনজিৎ কুমার হালদার। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সুশান্ত অধিকারী, সাজেন কৃষ্ণ বল, রাজ ঘোষ, ডেভিট পাল, দেব দত্ত , সবুজ দত্তসহ প্রমুখ প্রতিনিধিরা।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিজয়-৭১ ভবনের ২৭ নং কোর্টে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান ও আলী রেজা আহমেদের দৈত্ব বেঞ্চে জামিন শুনানি হয়। অত্র মামলাটি আজ -৭২ নং সিরিয়ালে ছিল।

বিচারপতিরা শুনানি শেষে ২ সপ্তাহের রুল জারি করেন। এ বিষয়ে জোটের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, আমরা সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আমাদের দেশের নাগরিক হিসেবে সবার ন্যায় অধিকার চাই।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু তথা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বহুবছর যাবত অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। 

৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে অধিকার আদায়ের এ আন্দোলন আরও বেগবান হয় ছাত্র-জনতা-সাধু-সন্ন্যাসীসহ সব স্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে। অধিকার আদায়ের যৌক্তিক এ আন্দোলন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশবিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা ও অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি পেশ করা হয়।

সরকারের বিভিন্ন পক্ষ থেকে এ ৮ দফার যৌক্তিকতা মেনে নেওয়া হলেও বাস্তবায়নের জন্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০২৪ এর দুর্গাপূজার পূর্ববর্তী সময়ে পূজার ছুটি ১ দিন বাড়ানো হয় এবং ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। যদিও আমাদের দাবি ছিল ৫ দিন ছুটির। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, ক্ষতিপূরণ প্রদান ও অন্যান্য দাবির বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার পক্ষ আর কোনো উদ্যোগ নেয় নি।

ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর নেতৃত্বে ছাত্র-জনতা-সাধু-সন্তু-আইনজীবী সহ অন্যান্য পেশাজীবীদের সঙ্গে নিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলন চলমান রাখে। আন্দোলন দমনের জন্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ অন্যান্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।

এসব মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন যাবত জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কোনো ধরনের আইনগত সহায়তা লাভের সুযোগ না দিয়ে কারাবন্দি করে রাখা হয় যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তিকে প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ন করে। যেসব মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাবন্দি রাখা হয় সেসব মামলার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। তথাপি নিম্ন আদালত জামিন প্রদান না করলে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হই। উচ্চ আদালতেও মামলাটি দীর্ঘদিন যাবত শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ থাকার পরে বিজ্ঞ আদালত আজ শুনানি করেন।

শুনানির পরে ২ সপ্তাহের রুল জারি করে আদালত। উক্ত রুলে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া যে, কেনো চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন প্রদান করা হবে না?

আমরা আদালত ও রাষ্ট্র পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই যে, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অতিশীঘ্রই জামিন প্রদান করা হোক এবং অতিদ্রুততার সঙ্গে এসব ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও জোর দাবি জানাচ্ছি।

আমরা সাম্প্রদায়িক সাম্য ও ন্যায্যতার রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই। সাম্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পূর্বঘোষিত ৮ দফা দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

Read Entire Article