সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চুনা নদীর বেড়িবাঁধ কেটে স্থাপিত অবৈধ মিনি স্লুইস গেটের ওপরের অংশ ধসে পড়েছে। এতে যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে প্লাবনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ কেটে স্থাপিত এসব গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলনের সুযোগ নিয়ে বছরের পর বছর চলছে মোটা অঙ্কের অর্থবাণিজ্য। ঘের মালিকরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে বেড়িবাঁধ। এতে উচ্চ জোয়ারের চাপ সহ্য করার সক্ষমতা হারাচ্ছে নদীপাড়ের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশির দশকে মৎস্য প্রকল্পের আওতায় শ্যামনগরে মিনি স্লুইস গেট বসানো শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীতে গেটগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপরও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবাধে গেট ব্যবহার করে আসছেন।
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পানখালী এলাকায় চুনা নদীর বাঁধে থাকা গেটটি এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনই বাঁধে ছোট ছোট ভাঙন দেখা দেয়। গেট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা লোকজন নরম মাটি দিয়ে তা ঢেকে রাখলেও স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। প্রতিদিন পানি ওঠানামার কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, পানখালী গেট দিয়ে প্রায় ১৫০০ বিঘা জমির মৎস্যঘেরে লোনা পানি তোলা হয়। প্রতি বিঘা জমির জন্য ৬০০ টাকা করে ঘের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করেন গেট নিয়ন্ত্রকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, রাসেল গাজী নামে একজন গেটটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বছরের পর বছর পানি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিকবার গেটটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তিনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন এই বাঁধের ওপর দিয়ে ছয়টি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। ধসে পড়া অংশে অস্থায়ীভাবে বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রাসেল গাজীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, পানখালীতে চুনা নদীর মিনি স্লুইচ গেটটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আশারাফ ও রাসেল গাজী জোরপূর্বক গেটটি দখল করে পানি ব্যবসা চালাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম বলেন, গেটটি অবৈধ। অনেক আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রাসেল গাজী তা ব্যবহার করছে। ওখান থেকে পানি ওঠানামা সম্পূর্ণ নিষেধ। কাউকে এ অনুমতি দেওয়া হয়নি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন বলেন, গেটটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপসারণ করা হবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এমএন/এএসএম

4 hours ago
3









English (US) ·