চুরি ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা
পিরোজপুরের নেছারাবাদে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে সিঁধ কেটে চুরি ও ধর্ষণের ঘটনায় হৃদয় হালদার (২৫) নামে এক যুবককে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা। অভিযুক্ত হৃদয় হালদার উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের কাটাপিটানিয়া গ্রামের রতন হালদারের ছেলে।
সোমবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় স্থানীয় দোকানদার বিপ্লব মিস্ত্রি বিটুর দোকানের সামনে স্থানীয় যুবকরা অভিযুক্ত হৃদয় হালদারকে আটক করে। পরে স্থানীয় চৌকিদার দীপেন সরকারের মাধ্যমে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ মার্চ) উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের কাটাপিটানিয়া গ্রামে রাত আড়াইটার দিকে সিঁধ কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন ভুক্তভোগী পরিবারের ঘরে চুরি, স্ত্রীকে বেদম পেটানো ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। কিন্তু অভিযুক্ত হৃদয় হালদার ওই পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও মামলা করতে ভয়-ভীতি দেখায়। প্রাণের ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয়দের জানালেও থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, ঘটনার দিন প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে দেওয়ায় আমার পরিবারের সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। এতে পেছনের দিকে সিঁধ কেটে একই গ্রামের হৃদয় হালদার প্রথমে ঘরে ঢুকে। আমার স্ত্রী ওই দিন রাতের খাবার খাইনি। প্রথমে ঘরে ঢুকে আমার স্ত্রীর কাছে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে নেয়। এ সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিলে তিনি রাজি না হওয়ায় মারধর করে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের ডাক-চিৎকার দিলে আমার স্ত্রীকে বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ দীপেন সরকার বলেন, লোকো লজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবার এতদিন ধর্ষণের ঘটনাটি চাপিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে যারা ভুক্তভোগী মহিলাকে উদ্ধার করেছিলেন তাদের মাধ্যমে উপজেলার সবাই বিষয়টি জেনে যায়। কিন্তু ইদানিং অভিযুক্ত হৃদয় হালদার ভুক্তভোগী পরিবারের সবাইকে হুমকি ধামকি দিচ্ছিল বলে স্থানীয়দের জানিয়েছিলেন। তাই তাকে আজ সন্ধ্যায় স্থানীয়রা ধরে আমাকে খবর দেয়। আমি থানায় জানালে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।
ইউপি সদস্য মনোজ কুমার ঢালী বলেন, হৃদয় হালদার বখাটে প্রকৃতির লোক। ওদের দলে একাধিক লোক এলাকায় নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চুরির ঘটনায় আরও পাঁচ জনের নাম বলেছে। তিনি চুরির ঘটনা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমিন বলেন, ঘরে সিঁধ কেটে চুরি এবং ধর্ষণের ঘটনার খবর শুনেছিলাম। তখন ভুক্তভোগী পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। কিন্তু আজকে অভিযুক্ত হৃদয় হালদারকে স্থানীয়রা ধরে থানায় জানালে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে চুরি ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।