চোখ খুললেও কথা বলতে পারছে না মবের শিকার সেই ২ কিশোর

3 hours ago 3

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চুরির অপবাদ দিয়ে পেটানোর ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই দুই কিশোর এখনো আশঙ্কামুক্ত নয়। তারা মাঝে মধ্যে চোখ খুললেও ফের জ্ঞান হারাচ্ছেন। 

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) আহত ওই দুই কিশোরের স্বজনরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা দুজনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত ওই কিশোর হলেন—মোহাম্মদ মানিক (১৫) ও ফারহান তানভীর রাহাত (১৪)। মানিককে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন সাপোর্ট আর রাহাতের পা ফুলে গেছে, শরীরে জ্বর বেড়েছে। আহত মানিক চমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ১১নং শয্যায় এবং রাহাত ২৯নং শয্যায় চিকিৎসাধীন। 

পরিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, মানিক চোখ খুলছে দীর্ঘক্ষণ পর, তবে মুখে কোনো কথা বলতে পারছেন না। হাত, পা নড়াচড়া করতেও পাচ্ছেন না। হাত, পা, মাথা ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত তিনি। আহত মানিকের মা রোজিনা আকতার বলেন, ‘সর্বশেষ গত শনিবার মানিক আমাকে মা বলে ডেকেছে, এরপর আর মা ডাক শুনতে পারেনি। আমার ছেলে এখনো স্বাভাবিক হতে পারছে না, তার জ্ঞান ফেরেনি পুরোপুরি।’ 

এদিকে ছেলের এমন করুণ দৃশ্য মেনে নিতে পারছেন রাহাতের মা রোজি আকতারও। তিনি জানান, সোমবার থেকে রাহাতের শরীরে জ্বর বেড়েছে। ডান পা প্রচণ্ড ফুলে গেছে। ছেলের সুস্থতা কামনা করার পাশাপাশি রোজি আকতার ঘটনার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোররাতে বাড়ি ফেরার পথে চোর আখ্যা দিয়ে কিছু যুবক মানিক, রাহাত ও মাহিনকে ধাওয়া দেয়। পরে তাদের ধরে চেঙ্গারমুখ ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটাতে থাকে এলাকার কিছু ব্যক্তি। ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত টানা পিটুনিতে রিহান উদ্দিন মাহিন (১৫) নামের এক কিশোর ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় মানিক ও রাহাত গুরুতর আহত হন। 

নিহত মাহিন কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাগর মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ির মোহাম্মদ লোকমান মনার একমাত্র ছেলে। আহতরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মাইজপাড়ার মাতব্বর বাড়ির বাসিন্দা। 

এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর আহমদ কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারে সোমবার রাতেও বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। এলাকাটি অনেকটা পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে। এজাহারভুক্তসহ তিন আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বাকিদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। 
 

Read Entire Article