চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে শঙ্কিত ইসি, তবে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা নেই

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এ ঘটনায় নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং সন্ত্রাসীরা যেন কোনোভাবেই পার পেয়ে না যায়—সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর বার্তা দিয়েছে ইসি। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এদিকে, ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনাকে ‘মাথার ওপর বাজ পড়ার মতো’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একদিন তপশিল ঘোষণা করা হলো, আর পরদিনই এমন একটি ঘটনা ঘটল। সম্ভাব্য প্রার্থীর হত্যাচেষ্টা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলার প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে রোববার ফুল কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহ

চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে শঙ্কিত ইসি, তবে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা নেই

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এ ঘটনায় নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং সন্ত্রাসীরা যেন কোনোভাবেই পার পেয়ে না যায়—সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর বার্তা দিয়েছে ইসি।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

এদিকে, ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনাকে ‘মাথার ওপর বাজ পড়ার মতো’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একদিন তপশিল ঘোষণা করা হলো, আর পরদিনই এমন একটি ঘটনা ঘটল।

সম্ভাব্য প্রার্থীর হত্যাচেষ্টা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলার প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে রোববার ফুল কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার।

বৈঠক শেষে ইসি জানায়, তপশিল ঘোষণার পর উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সামনের দিনের কার্যক্রম ও কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর মতামত নেওয়া হয়েছে।

চোরাগোপ্তা হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। আশঙ্কার বিষয় হলো, যাকে সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হচ্ছে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছিলেন। পাশাপাশি তার অতীতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অপরাধমূলক রেকর্ড থাকার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।

তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে জানা গেছে—আগে গ্রেপ্তার হওয়া অনেক সন্ত্রাসী জামিন পেয়ে আবার সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থায় কীভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সব বাহিনী সর্বোচ্চ কঠোরতা দেখায়। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই।

সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, তপশিল ঘোষণার পর যেকোনো ঘটনারই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব নির্বাচনের ওপর পড়তে পারে, এটি অস্বাভাবিক নয়। তবে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপে ইসি সন্তুষ্ট হলেও আরও জোরদার উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—অধিক সংখ্যক চেকপোস্ট স্থাপন, সন্ত্রাসীদের চলাচল সীমিত করা, জামিনে থাকা সন্ত্রাসীদের পুনরায় গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে বিশেষ অভিযান জোরদার করা।

বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা ও পারস্পরিক সমন্বয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা ও দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নজরদারি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় ব্যক্তিদের ‘বন্ধু সেজে কাছে আসা’ লোকদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান সানাউল্লাহ।

রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক দোষারোপের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও অপরিপক্ব তথ্য ছড়ানো বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে বলেও জানান।

ভীতির পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে সানাউল্লাহ বলেন, যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা ভয় সৃষ্টি করতে চায়, কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা কোনোভাবেই সফল হতে দেবে না।

প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। বিষয়টি বিস্তারিত জেনে পরে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow