ছাগলকাণ্ডের মতিউরকে কাঠগড়ায় স্ত্রীর ধমক, ‘তোমার জন্য এসব হয়েছে’

7 hours ago 3

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে আদালতের কাঠগড়ায় ধমকাধমকি করেছেন তার স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলামের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এদিন কাঠগড়ায় ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার আসামি মতিউর ও লায়লা। একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে মতিউরকে ধমক দেন লায়লা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে মতিউর ও লায়লাকে কাঠগড়ায় তোলার পর তারা তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। কখনো মতিউর, আবার কখনো লায়লা কথা বলছিলেন। এ সময় মতিউর মাথা এগিয়ে কথা বলতে গেলে লায়লা তার স্বামীকে ধমক দেন। তিনি বলেন, ‘তুমি বেশি কথা বলো। চুপ থাকো। আমি বলছি। তোমার জন্য এসব হয়েছে।'

স্ত্রীর ধমক খেয়ে দমে যান মতিউর। পরে আইনজীবীর সঙ্গে কথা চালিয়ে যান লায়লা। একপর্যায়ে পাশ থেকে এক নারী এসে তাকে বলেন, ‘এখানে সাংবাদিক আছে। সাবধানে কথা বইলো।’ তখন তারা সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে পরে আস্তে আস্তে কথা বলতে থাকেন।

এরপর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে এজলাসে আসেন বিচারক। তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

ছাগলকাণ্ডের মতিউরকে কাঠগড়ায় স্ত্রীর ধমক, ‘তোমার জন্য এসব হয়েছে’

শুনানিতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, ভুয়া কোম্পানি ও কাগজপত্র দেখিয়ে আসামিরা টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করেন। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। অন্যদিকে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান (লিটন ঢালী) রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত থেকে আসামিদের একদিন করে রিমান্ডের আদেশ আসে।

শুনানি শেষে কাঠগড়ায় মতিউরকে তার স্ত্রীর ধমকানোর বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টা এমন না। মতিউর রহমান আদালতে কথা বলতে চেয়েছিল। তখন তার স্ত্রী নিষেধ করেন। কারণ আদালতে বলা না বলা সমান। এখানে বলে লাভ নেই।’

গত বছরের ২ জুলাই মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরের ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজন সম্পদ বিবরণী জমা দেন। তাতে মতিউর ও লায়লার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি সম্পত্তির তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার অধিক সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে। এ ছাড়া দুজনের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ প্লেসমেন্ট শেয়ার কেনাবেচার তথ্য রয়েছে।

এসব অভিযোগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি দুদক মামলা করে এবং ১৪ জানুয়ারি মতিউরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে আসামিদের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ জমি, ব্যাংক হিসাবসহ নানা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত।

এমআইএন/একিউএফ/জিকেএস

Read Entire Article