রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় ছাত্রদলের নবগঠিত ১১ সদস্যের আংশিক কমিটির মাত্র ৪ জন সদস্যের নাম রয়েছে। বাকি ৭ জনের ছাত্রত্ব না থাকায় ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হননি।
নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, শুধু স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরাই ভোটার বলে গণ্য হবেন। এর বাইরে সান্ধ্যকালীন বা বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত কোর্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, এবারের রাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ২৫ হাজার ১২৭ জন। এরমধ্যে ছাত্র ভোটার ১৫ হাজার ৪৪০ জন ও ছাত্রী ভোটার ৯ হাজার ৬৮৭ জন। মোট ভোটারের ৬১ শতাংশের বেশি ছাত্র আর ৩৮ শতাংশ ভোটার ছাত্রী।
খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকা ছাত্রদলের কমিটির ৪ নেতা হলেন- সহ-সভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিঠু এবং দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন।
তাদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু বিশেষ বিবেচনায় ২০২৩-২৪ সেশনে ভর্তি হয়ে ছাত্রত্ব ধরে রেখেছেন। অন্যদিকে মাস্টার্সে দুই বছর ধরে আছেন দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন।
নতুন কমিটির ৭ নেতারই নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই। যার কারণে তারা ভোটার বলে গণ্য হননি। এই নেতারা হলেন, সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী সর্দার জহুরুল, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিলুর রহমান সোহাগ, সহ-সভাপতি ভূগোল বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিহা আলম মুন্নি, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপ বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শফিক এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফারসি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমান।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদকর জহুরুল বলেন, আমরা কমিটি আরও বাড়াবো, আমাদের হল কমিটি হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। আমাদের মতো আমরা কমিটি করে নির্বাচন বা যেকোনো কাজে থাকবো। কমিটির কাজ চলমান। খুব দ্রুত কমিটি ঘোষণা করবো। প্রশাসন ভোটার তালিকা তাদের মতো করে করেছে। আমাদের দাবি-দাওয়া বিচার বিশ্লেষণ না করেই তারা কমিটি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমারই নির্বাচন করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমাদের শতশত নেতাকর্মী আছে। তারা নির্বাচন করবে। আমরা ৫-১০টা প্যানেল দিতে পারবো।
গতকাল এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমদ রাহী বলেন, ছাত্রদল কোনো ভুঁইফোড় সংগঠন না, এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সংগঠন। যদি কেও মনে করে রুয়ার মতো একতরফা বিনা ভোটে, জামায়াতের অনুগত হয়ে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে তাহলে এতগুলো শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের নেতাকর্মীর রক্তের ওপর দিয়ে তাকে রাকসু নির্বাচন করতে হবে।
মনির হোসেন মাহিন/এমএন/এমএস