গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর প্রেক্ষিতে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।
এরই প্রেক্ষিতে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অন্তত দুপুর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্যছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে এটি টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের পাশে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার। তবে এটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানার।
বুধবার এক প্রতিবেদনে রিউমর স্ক্যানার জানায়, তাদের টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রচারিত দৃশ্যটি টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠের পাশে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের দৃশ্যের নয় বরং গত জুনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে এমডি রাব্বি খান নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘আমাদের রাজশাহী’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ‘কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ আগুন’ শীর্ষক ক্যাপশনে চলতি বছরের গত ২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।
ওই ভিডিওটির সঙ্গে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়, যা নিশ্চিত করে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
এ ছাড়া মূলধারার গণমাধ্যম একাত্তর টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আ/গু/ন; পুড়ে ছাই দুই শতাধিক ঘর’ শীর্ষক শিরোনামে চলতি বছরের গত ১ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
সংবাদ প্রতিবেদনটিতে উক্ত আগুনের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের সঙ্গেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির আগুনের দৃশ্য ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাদৃশ্য পাওয়া যায়। তা ছাড়া কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনের দৃশ্য দাবিতে এমডি ইউ সুফ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে চলতি বছরের গত ২ জুনেও একটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়, যার সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
ভাইরাল এই ভিডিওতে যে অডিও ব্যবহার করা হয়েছে, তার সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন লাগার ঘটনার কোনো সম্পর্ক পায়নি রিউমর স্ক্যানার। প্রযুক্তির সাহায্যে ভিন্ন ঘটনার অডিও আলোচিত এই ভিডিওতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
উল্লেখ্য, ১৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়া হাজী মার্কেট এলাকায় বসতবাড়িতে আগুন লেগে দগ্ধ হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আগুনে ওই বসতবাড়ির সাতটি টিনশেড কক্ষ পুড়ে গেছে। এদিকে গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনা ঘটলেও উক্ত স্থানে কোনো অগ্নিকাণ্ডের খবর মেলেনি।
সংস্থাটি বলছে, কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনের ঘটনার পুরোনো দৃশ্যকে টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠের পাশে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।