আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ভোমরা বন্দর। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, ৬ মাসে তার চেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ করতে সক্ষম হয়েছে বন্দরটি। সামনে এ অর্থবছরের আরও বাকি আছে ৬ মাস।
অধিক হারে বাণিজ্য গতিশীল হওয়ায় বেড়েছে রপ্তানি মূল্যের প্রবৃদ্ধি। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভোমরা বন্দর দিয়ে দেশীয় পণ্য ভারতের বাজারে রপ্তানি করে রাজস্ব অর্জন করেছে ১৬ কোটি ২৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৩ টাকা।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৫ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার ১২৭ টাকা। আগস্ট মাসে ৩১ হাজার ৬৪৮ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৪ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৩০ হাজার ৫০,০২৪ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে আয় হয় ২ কোটি ৭৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৫০ টাকা, অক্টোবর মাসে ২৫ হাজার ৫১৫ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে আয় হয় ২ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার ৯ টাকা, নভেম্বর মাসে ৩০ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ২৭ হাজার ৬০৪ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানিতে আয় হয় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার ১৩৪ টাকা।
চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে দেশীয় পণ্য রপ্তানি করে সরকার ১৬ কোটি ২৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৩ টাকা অর্জন করতে সক্ষম হয়। স্থল শুল্ক স্টেশনের এন্ট্রি শাখা থেকে রপ্তানির তুলনামূলক এসব তথ্য নেওয়া হয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যে দেশীয় মুদ্রায় রাজস্ব আহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, উল্লেখযোগ্যভাবে রপ্তানি বাণিজ্য বেড়েছে ভোমরা বন্দরে। রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশের শীর্ষ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভোমরা বন্দর ব্যবহার করছে। ভোমরা বন্দর দিয়ে ২৩টি বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় পণ্য ভারতের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে।
ভোমরা বন্দর দিয়ে রপ্তানিকৃত পণ্যের মধ্যে ইয়ার্ন, ক্লিনিং ক্লথ, ক্যাপ, জুট ইয়ার্ন, পলেস্টার স্টাপল ফাইবার, কুড়ার তেল, ফার্নিচার, মশারির নেট, পলেস্টার সুতা, ফিশি নেট, প্লাস্টিক বাথরুম ফিটিং, তাঁত শাড়ি, লুঙ্গি, ক্লে, অপরিশোধিত তিলের তেল, কটন ওয়েস্ট, ট্রাভেল ব্যাগ, সয়া এসিড ওয়েল, রেডিমেড গার্মেন্টস, টোস্ট, জুস, চিপস ও লিচি। দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের চেয়ে ভোমরা বন্দরে রপ্তানি মূল্যের প্রবৃদ্ধি ১৮.৯৫%।
ভোমরা কাস্টম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা জাগো নিউজকে জানান, পণ্য রপ্তানিতে আমাদের দেশ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো সুবিধা লাভ করছে।
অপরদিকে বিদায়ী বছরের শেষ ৬ মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্যে ৬০৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে সরকার। চলতি বছরের জুলাই মাসে ভারত থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানিতে ৮৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আগস্ট মাসে ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন পণ্য আমদানিতে ৯৬ কোটি ২০ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানিতে ৮৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৪২ হাজার ৫২৬ মেট্রিক টন পণ্য আমদানিতে ১২৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা, নভেম্বর মাসে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৪৮.৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানিতে ১২২ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করে রাজস্ব আয় হয় ৮৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে সরকার ভোমরা বন্দর থেকে ৬০৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার রাজস্ব আহরণ করেছে আমদানি বাণিজ্য থেকে।
সরকার ভোমরা বন্দরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ১০০৯ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে অর্থবছরের ৬ মাসে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে সক্ষম হয়েছে ভোমরা বন্দর।
আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/জেআইএম