দেশের জনগণের জীবন উন্নয়ন করাই বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আমরা যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবো।
সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে জাতীয়তাবাদী যুবদলের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, কথার মালার রাজনীতি মানুষ আর চায় না। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি যেমন বুঝি, এখানে প্রত্যেকটি মানুষ অনুধাবন করেন বাংলাদেশের জনগণ পরিবর্তন চায় এখন। আর স্বপ্ন কিংবা প্রতিশ্রুতি নয়, জনগণ এবার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করছে। আমাদের নেতাকর্মী, আমাদের দলের ভেতরে, দলের বাইরে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করছি, কাজ করছি। আমাদের আগামী দিনের নীতি জনগণের জীবন উন্নয়নের রাজনীতি। দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হবে আমাদের রাজনীতির অন্যতম মূল লক্ষ্য।
- আরও পড়ুন
জুলাই ঘোষণাপত্র: ফখরুলের নেতৃত্বে অংশ নেবে বিএনপির প্রতিনিধিদল
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত বিএনপি: সালাহউদ্দিন
তারেক রহমান আরও বলেন, তবে সারাদেশে জনগণের কাছে বিএনপির পরিকল্পনাগুলো পৌঁছে দিতে হবে। কারণ জনগণের রায় আমাদের প্রয়োজন, জনগণের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন, জনগণের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন- মানুষের জন্য নেওয়া এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য।
তারেক রহমান তার দীর্ঘ বক্তব্যে যুব সমাজের কর্মসংস্থানে কী কী করণীয় তার বিস্তারিত পরিস্কল্পনার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত, তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের কথাও বলেন। যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলনে যুবদলের নেতাকর্মীরা নির্যাতন, নিপীড়ন উপেক্ষা করেও রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের শত নির্যাতনে, নিপীড়নেও যুবদল পিছিয়ে যায়নি, রাজপথ ছেড়ে যায়নি। শুধুমাত্র জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যুবদলের ৭৮ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যুবদলের শহীদ নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকার পাঁচটি স্থানে আঁকা গ্রাফিতির ওপরে তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর কবিতা আবৃত্তি করেন নাসিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি এম আবদুল মোনায়েম মুন্না। সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেদি আমিন, মানবাধিকারকর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন, দীর্ঘদিন গুম হয়ে থাকা অ্যাডভোকেট সোহেল রানা, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সায়েম আল মনসুর ফয়েজী, শহীদ মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে আপন, ইয়াহিয়া আলীর মেয়ে তাইয়েবা খাতুন, হাফিজুর রহমান সুমনের স্ত্রী বিধী আখতার, নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আখতার নেহা, আহত কর্মী আমিনুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
কেএইচ/কেএসআর