দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমনের জন্মদিন আজ (১৬ মার্চ)। তার অনুরাগীরা দিনটিতে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন। তার সহকর্মীর তাকে এমন দিনে স্মরণ করছেন।
প্রিয় মানুষের জন্মদিন কণ্ঠশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী বিশেষ ভালোবাসায় জানিয়ে বলেন, ‘এই দিনটা আমার সব সময় মনে থাকে। নব্বইয়ের দশকে বাংলা গানকে নতুন পথ দেখিয়েছিলেন। বলা ভালো, নতুন ভাবে আবিষ্কার করেছিলেন। তাকে সেই সময়ের বাংলা গানের পথপ্রদর্শক বললেও ভুল বলা হবে না।’
‘কবীর সুমন আলো দেখিয়েছেন’ এমনটা উল্লেখ করে রূপঙ্কর বলেন, ‘আমাদের স্মৃতি তো দুর্বল। আমরা ভুলে যাই। আমরা বুঝে উঠতে পারি না, কোন পথটা আমাদের বেছে নেওয়া উচিত। কবীর সুমনই কিন্তু তখন আমাদের আলো দেখিয়েছিলেন। সেই আলো অনুসরণ করেই গত বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা সংগীতকর্মীরা হেঁটে চলেছি। তিনি তো আমার পথপ্রদর্শক বটেই। কবীর সুমন আমার জীবনের আলো। তার গান, তার ভাবনাচিন্তা, মঞ্চে তার উপস্থিতি, মঞ্চে গানের মাঝে তার কথা বলা— আমার কাছে আলোর মতো। তার অনুষ্ঠান যত দেখেছি, কমতে থেকেছে অন্য শিল্পীদের অনুষ্ঠান দেখার অভ্যাস। কলকাতার মধ্যে তার অনুষ্ঠান থাকলেই আমি দর্শক আসনে উপস্থিত থাকতাম। সব সময় চেষ্টা করতাম, টিকিট সংগ্রহ করার ও দেখার।’
রূপঙ্করের উপর সুমনের প্রভাব অনেকাংশে পড়েছে বলেও তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে রূপঙ্কর বলেন, ‘অনুষ্ঠানে গিয়ে তার গান শুনেছি। মোহিত হয়ে তার কথা শুনেছি। তাই মুহূর্তগুলোই কিন্তু আমাকে তৈরি করেছে। আমি এখন যা, তার অনেকাংশই সেই মুহূর্তগুলোর জন্যই। এখন গান লেখা, বা গান নিয়ে যা যা কাজ করি, তার উপর কবীর সুমনের প্রভাব ভীষণ ভাবে রয়েছে। একটি সিনেমায় তার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। সিনেমার নাম ছিল “জাতিস্মর”। সিনেমার দুটি গান আমাকে গাইতে দিয়েছিলেন। একটি গান পুরস্কারও পেয়েছিল। আমার গানের তালিকায় এই গান দুটি অন্যতম, আজীবন তা-ই থাকবে।’
ব্যক্তি কবীর সুমনকে নিয়ে রূপঙ্করের কোনো আগ্রহ নেই। তিনি মানুষ হিসেবে কেমন, ছোটবেলায় তিনি কেমন ছিলেন, তার বাবা-মা তাকে মারতেন কি না, তার জীবনে কতবার প্রেম এসেছে, কী দিয়ে ভাত মেখে খান— এর কোনো কিছু নিয়েই রূপঙ্করের কোনো ভাবনা নেই। তিনি কেবল কেবলই সুমনের কাজ নিয়ে আগ্রহী। তার কারণ, সুমন যে কাজটা করেছেন সেটা আর কেউ করতে পারবেন না।
কবীর সুমনের জন্মদিনে অনুষ্ঠান নিয়ে রূপঙ্কর লেখেন, ‘আজ জন্মদিনে কবীর সুমন অনুষ্ঠান করছেন আমি জানি। আমার পক্ষ থেকে তাকে অনেক শুভেচ্ছা। এখন বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করছেন কবীর সুমন। আমার মতো সামান্য এক অনুরাগীর পক্ষ থেকে তার কাছে একটা দাবি রয়েছে। বাংলা খেয়াল নিয়ে তিনি যেমন কাজ করছেন, তেমনই যেন আধুনিক গান নিয়েও আরও কাজ করেন। তাতে আমরা আর একটু সমৃদ্ধ হতে পারব। বাংলা আধুনিক গানের সময়টা এখন বিশেষ ভাল নয়। একটা সময় বাংলা আধুনিক গান পিছিয়ে পড়ছিল। তখন তিনিই এসে পথ দেখিয়েছিলেন। এখন আবার বাংলা আধুনিক গানের জায়গাটা নড়বড়ে হয়েছে। তার গান শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। তার গান শুনতে শুনতেই মারা যাব। তাই চাইব, বাংলা আধুনিক গান নিয়ে তিনি যেন আরও কিছু কাজ করেন।’
এমএমএফ/জিকেএস