জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দিতে গড়িমসি, ঝুঁকিতে প্যারিস চুক্তি
দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু পরিকল্পনা দ্রুত জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। প্রধান দূষণকারী অনেক দেশ এখনো প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, প্যারিস চুক্তির আওতায় প্রায় ২০০ দেশকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন পরিকল্পনা জমা দেওয়ার কথা ছিল। এসব পরিকল্পনায় ২০৩৫ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা এবং তা বাস্তবায়নের রূপরেখা দেওয়ার কথা। তবে মাত্র কিছু দেশ সময়মতো পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। এখনো চীন, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সংশোধিত পরিকল্পনা দেয়নি।
সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিয়েল পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে দ্রুত পরিকল্পনা প্রকাশ করতে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয় জলবায়ু পরিকল্পনা শুধু নথি নয়, এগুলো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার মূল ভিত্তি।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএফসিসিসি) নভেম্বরের কপ-৩০ সম্মেলনের আগে নতুন প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। স্টিয়েল আশা প্রকাশ করেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পর্যাপ্ত দেশ পরিকল্পনা জমা দেবে।
তিনি ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আয়োজিত বিশেষ জলবায়ু ইভেন্টে বিশ্ব নেতাদের নতুন প্রতিশ্রুতি ঘোষণার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় ১৯০ দেশ এ বছর সংশোধিত পরিকল্পনা জমা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এরইমধ্যে ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৩০টি দেশ তা জমা দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনাটি মূলত প্রতীকী বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দেওয়ার ধীরগতি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পদক্ষেপের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নিরাপত্তা সংকট ও বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ এ বিষয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে।
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, বৈশ্বিক তাপমাত্রা শিল্পপূর্ব সময়ের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হবে। কিন্তু বর্তমানে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে। নির্গমন কমাতে হলে এই দশকের মধ্যেই প্রায় অর্ধেক হ্রাস করতে হবে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে।