জলে গেলো দুই যুবকের ৪০ লাখ টাকা, নিঃস্ব পরিবার
কানাডার ভিসা ও চাকরির প্রলোভনে যশোরের দুই যুবকের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কানাডার ভুয়া ভিসা ধরিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে প্রতারক চক্র। এতে পথে বসেছে ওই দুই যুবকের পরিবার। ঘটনার শিকার দুই যুবক হলেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কালিয়ানী গ্রামের আবু সায়েমের ছেলে আলসাবা রাতুল ও হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল। প্রতারক চক্রের সদস্য নাসির উদ্দিন আলতাফ ও তার স্ত্রী শাহানাজ বেগম ভুক্তভোগী দুই যুবকের পরিবারের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ। নাসির উদ্দিন আলতাফ একই গ্রামের মৃত আবু তালেব মোড়লের ছেলে। বিদেশে পাঠানোর নাম করে আলতাফ ও তার স্ত্রী দুজন মিলে ঢাকায় ভুয়া নামে ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা ঝিকরগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রতারণার শিকার আলসাবা রাতুল জানান, দালাল নাসির উদ্দিন আলতাফ ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তাকে নেপালে নিয়ে যান। সেখানে কানাডার অ্যাম্বাসিতে নিয়ে ইন্টারভিউসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে এক সপ্তাহ পরে দেশে পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয়বার গিয়ে নেপালে একটি হোটেলে দুই মাস আটকে রাখেন। চুক্তি ছিল ওই দুই যুবকের কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা করে ন
কানাডার ভিসা ও চাকরির প্রলোভনে যশোরের দুই যুবকের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কানাডার ভুয়া ভিসা ধরিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে প্রতারক চক্র। এতে পথে বসেছে ওই দুই যুবকের পরিবার।
ঘটনার শিকার দুই যুবক হলেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কালিয়ানী গ্রামের আবু সায়েমের ছেলে আলসাবা রাতুল ও হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল।
প্রতারক চক্রের সদস্য নাসির উদ্দিন আলতাফ ও তার স্ত্রী শাহানাজ বেগম ভুক্তভোগী দুই যুবকের পরিবারের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ।
নাসির উদ্দিন আলতাফ একই গ্রামের মৃত আবু তালেব মোড়লের ছেলে। বিদেশে পাঠানোর নাম করে আলতাফ ও তার স্ত্রী দুজন মিলে ঢাকায় ভুয়া নামে ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা ঝিকরগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রতারণার শিকার আলসাবা রাতুল জানান, দালাল নাসির উদ্দিন আলতাফ ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তাকে নেপালে নিয়ে যান। সেখানে কানাডার অ্যাম্বাসিতে নিয়ে ইন্টারভিউসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে এক সপ্তাহ পরে দেশে পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয়বার গিয়ে নেপালে একটি হোটেলে দুই মাস আটকে রাখেন। চুক্তি ছিল ওই দুই যুবকের কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা করে নেবেন। হোটেলে আটকে রেখে বাড়িতে ফোন দিয়ে চুক্তি বাদে আরও এক লাখ করে টাকা নেওয়া হয়। এরপর কানাডার ভিসা লাগানো পাসপোর্ট হাতে দিয়ে ওইদিন দালাল নাসির উদ্দিন আলতাফ কুয়েতে পালিয়ে যান।
রাতুল বলেন, ‘পরে বুঝতে পারি এটা কোনো কানাডার অ্যাম্বাসি ছিল না। তারা একটি অ্যাম্বাসি অফিস বানিয়ে সেখানে নিয়ে গিয়ে কাগজপত্র জমা নেন এবং ইন্টারভিউ নেন, যাতে আমরা সন্দেহ না করি। আমাদের যখন পাসপোর্ট হাতে দেয় তখন দেখি, পাসপোর্ট খোলা। পরে দেশে এসে পাসপোর্ট অনলাইনে যাচাই-বাছাই করে দেখি এটা কানাডার ভুয়া ভিসা।’
আলসাবা রাতুলের বাবা আবু সায়েম বলেন, ‘একটা সুন্দর জীবনের আশায় জমি বন্ধক ও ধানের ওপরে সুদ নিয়ে ১৯ লাখ টাকা দিয়েছি দালাল আলতাফকে। ব্যাংকের মাধ্যমে ও নগদ অর্থ তার হাতে তুলে দিই। সুদের টাকা দিতে দিতে আজ আমি পথের ফকির। বছরে দুইবার আড়াই লাখ করে পাঁচ লাখ টাকা সুদ দিতে হচ্ছে। আজ আমি নিঃস্ব।’
প্রতারণার শিকার আরেক যুবক শাকিল হোসেনের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নাসির উদ্দিন আলতাফ আমার ফুপাতো ভাই। তারা স্বামী-স্ত্রী লোক পাঠানোর (আদম) ব্যবসা করে। আলতাফ একদিন এসে বলে, ভাই আমার তো ছেলে নেই। আপনার ছেলে মানেই আমার ছেলে। ছেলের জন্য একটা ভালো চাকরি আছে কানাডায়। ছেলেকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। নাসির উদ্দিন আলতাফের কথায় বিশ্বাস করে আমার দোকানপাট, জমি-জায়গা, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সব বিক্রি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সাতবারে ১৯ লাখ টাকা দিয়েছি। আজ আমার আপনজন আমাকে বড় ক্ষতি করলো। পথে বসালো। আমি এর বিচার চাই।’
তবে অভিযুক্ত দালাল নাসির উদ্দিন আলতাফের দাবি, তিনি মাধ্যম হিসেবে যোগাযোগ করে দিয়েছেন। ২০ লাখ টাকার মতো নেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে বসাবসিও হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে তারা নানান জায়গায় নানান কথা বলছেন।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, কানাডায় পাঠানোর নামে ভুয়া ভিসা দেওয়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
মিলন রহমান/এসআর/এমএস
What's Your Reaction?