জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে দণ্ডিতদের ছবি প্রদর্শনীর প্রতিবাদে রাজাকার লেখা কুশপুত্তলিকা দাহ ও মশাল মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে একটি মশাল মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ছাত্রদের সাতটি হল সংলগ্ন রাস্তা ঘুরে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে রাজাকার লেখা কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হল, শহীদ সালাম-বরকত হল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হল, ২১ নং হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হল থেকে শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়ার সঞ্চালনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেল বলেন, যে রাজাকাররা বাংলাদেশের জাতির পতাকা খামচে ধরেছিল সেই রাজাকারদের ছবি গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্তৃক প্রদর্শনী করা হয়েছে। রাজাকারদের ছবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হওয়ার মতো কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকার বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবির ট্যাগ দিয়ে হত্যাকরাসহ যাকে তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করেছে। আমরা সেসব নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা বলতে চাই না কোনো রাজাকার এ দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে। ৫ আগস্টের পর থেকে যখনই আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে চেয়েছি তখনই আমাদেরকে আওয়ামী লীগের দোসর বলে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাজাকার কারা, যারা ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীনতাবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী জোট। চরম আওয়ামী বিদ্বেষ মানেই রাজাকার হিসেবে গণ্য করার কোনো মানে নেই। খুব প্র্যাকটিসিং মুসলিমকেও রাজাকার হিসেবে গণ্য করার কোনো কারণ নেই। আমরা বিশ্বাস করি, যারা ১৯৭১ সালে নিজেদেরকে পাকিস্তানের সহায়ক ফোর্স হিসেবে গণ্য করেছে, বাংলাদেশে যত গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ ঘটেছে, তারা নিরঙ্কুশভাবে সহযোগিতা করেছে আমরা তাদের রাজাকার হিসেবে ঘোষণা করছি।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে কিংবা বর্তমানে যেকোনো সময়, যেকোনো অছিলায় যদি রাজাকারকে ‘নরমালাইজ’ করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে স্বাধীনতাকামী ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই তা বরদাশত করবে না। আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সবাইকে স্বাগত জানাতে চাই, কিন্তু গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ, গণহত্যা সহযোগী জামায়াত ও শিবিরকে কখনোই আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে রিলেটেবল মনে করি না।
সৈকত ইসলাম/এমএন/এএসএম