বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ইসলাম একটা সার্বজনীন পরিপূর্ণ জীবন বিধান। ইসলামে বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম হচ্ছে আলোকিত সমাজ গঠনের একমাত্র দৃষ্টান্ত। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দেশের প্রতিটি মানুষ সাংবিধানিক অধিকার যথাযথ পাবে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শৈত্য প্রবাহ, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় ধর্ম দেখে ক্ষতি করে না। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমাজের সব স্তরের মানুষ। তাই জামায়াতে ইসলামী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায় শুধু মানুষ হিসেবে। আমরা দল-মত, ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর বিবেচনা করি না। কারণ এটাই ইসলামের শিক্ষা, ইসলামের আদর্শ।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ডেমরার সারুলিয়ার হাজীনগর এলাকায় ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বী ৩ শতাধিক পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করেন নূরুল ইসলাম বুলবুল।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালন করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী মক্কা বিজয়ের পর সেখানকার ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা এবং অধিকার লুণ্ঠিত হয়নি বরং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জান ও মালের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলে, এখানকার প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে। রাষ্ট্রীয় সহায়তায় যেভাবে মসজিদের উন্নয়ন হবে একইভাবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ের উন্নয়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, দাঁড়িপাল্লা প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের বিচারিক হত্যা করা হয়েছে, হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এক সেকেন্ডের জন্যও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি, হবে না। জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম হচ্ছে- সমাজ সংস্কার ও সমাজসেবা। আমরা সমাজসেবা করার সুযোগ পেয়েছি। জনগণ আমাদের সমাজ সংস্কার করার সুযোগ দিলে, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জাতিকে একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেবে।
তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।
ডেমরা মধ্য থানা আমির মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও ডেমরা পশ্চিম থানা আমির মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমেদ খান, দেল্লা মন্দিরের পুরোহিত মরণ সরদার, জামায়াত নেতা ডা. সায়েদুল হক পাটোয়ারী, আরিফুর রহমান মাহিম, গিয়াস উদ্দিন, নুর হোসেন, ইসমাইল হোসেন, কামাল আমিন প্রমুখ।