জামায়াতসহ যুগপৎ আন্দোলন করা দলগুলোর সঙ্গে এনসিপি নেই : নাহিদ ইসলাম 

2 hours ago 3

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এনসিপি তার লক্ষ্য নিয়েই এগোবে। আমাদের সঙ্গে যাদের মতাদর্শ মিলে তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। এই মুহূর্তে কোনো জোটভিক্তিক চিন্তাভাবনা নেই এনসিপির। জুলাই সংস্কারের আইনি ভিত্তির জন্য গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দলের সমন্বয় সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

এদিন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে সমন্বয় সভা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দিনব্যাপী চলে এই আয়োজন। এতে অংশ নেন জেলা-উপজেলার সমন্বয়ক কমিটির প্রতিনিধি, এনসিপির যুব উইং যুব শক্তি, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের প্রতিনিধিরা। 

এ সময় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান করতে আহবায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, গণপরিষদ ও জাতীয় নির্বাচন আমরা যেহেতু একসাথে চাচ্ছি, সেই যৌথ নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা এবার প্রতিটি উপজেলায় যাব, আমাদের উঠান বৈঠক নামে কর্মসূচি চলমান রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির যে ২৪ দফা কর্মসূচি নিয়ে রয়েছে সেটিগুলো নিয়ে আমরা মানুষের দুয়ারে আবারও যাব। আগামী অক্টোবরের মধ্যে সব উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটি হয়ে যাবে। 

তিনি বলেন, নিম্নকক্ষে আমরা পিআর চাই না, তাই জামায়াত ইসলামীসহ যে কয়কটি দলে যুগপৎ আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আমরা নেই। আমরা এই মুহূর্তে কোনো জোটে যাচ্ছি না। আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের মাধ্যমে সংসদকে অংশগ্রহণমূলক দেখতে চাই, সেটি নিশ্চিত করে আমরা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। 

নাহিদ বলেন, আমরা নিবন্ধন পেতে যাচ্ছি। শাপলা প্রতীকের না দেওয়ার পক্ষে কোনো যথাযথ যুক্তি নির্বাচন কমিশন দিতে পারেনি। আমরা আশা করছি আমরা শাপলা প্রতীক পাব। ‌

তিনি বলেন, গণমাধ্যমই আমাদের শেষ ভরসা, আমাদের কোনো প্রতিষ্ঠান নাই, সাংবাদিকরাই ভরসা। আমরা হারিয়ে যাইনি, আমরা দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। মাঝের সময়টা প্রবাসীদের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে।

এর আগে সমন্বয় সভায় বক্তব্যের শুরুতে নাহিদ ইসলাম জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আমাদের দল গঠনের এক বছর পরে নিজেদের আত্মমূল্যায়ন, আত্মসমালোচনা এবং সামনের করণীয় নির্ধারণ করা প্রয়োজন। দল হিসেবে এনসিপি সাংগঠনিকভাবে এক বছরে যতটা শক্তিশালী হওয়ার কথা ছিল, তা অর্জন করতে পারেনি। এর নানা বাস্তবতা ছিল। গত এক বছর বাংলাদেশ নানা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর অনেক দায়িত্ব আমাদের ওপর এসে পড়ে। আমরা আত্মমূল্যায়ন করছি, যাতে সামনে ভুল না হয়। 

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াকে দলের একটি অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই নির্বাচন হবে। গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরাই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে এবং গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের ভূমিকার স্বীকৃতি দিয়ে তাদের নেতৃত্বের জায়গা দিতে হলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য। এটি আমাদের বড় অর্জন। 

ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এনসিপি সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচনী ফলাফলকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে উঠবে- এটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আমরা যে প্যানেলগুলোকে সমর্থন দিয়েছিলাম, তারা আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। এ কারণে আমরা নিজেরা ভাবছি, এই এক বছরে কী হলো, কেন আমরা পারলাম না, আমাদের ব্যর্থতা কোথায় ছিল। এ নিয়েই আমাদের মধ্যে আত্মসমালোচনা ও আত্মমূল্যায়ন হয়েছে। তবে আমাদের সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বা প্যানেল খুব অল্প সময় পেয়েছে রাজনীতি করার। 

Read Entire Article