এক ব্যক্তির প্রতি অন্যায্য তদন্ত ও অভিযোগ আনার দায় স্বীকার করে তার কবরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে জাপানের টোকিও পুলিশ ও প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিজো আইসামা নামে এ ব্যক্তি ব্যবসায়ী ছিলেন। ২০২০ সালের মার্চে তাকে এবং তার আরও তিন সহকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তারা অবৈধভাবে বিদেশে স্প্রে ড্রায়ার মেশিন রপ্তানি করেছেন। এটি এমন এক মেশিন যা তরলকে গুঁড়োতে পরিণত করতে পারে। এই মেশিনটি সামরিক বাহিনীও ব্যবহার করতে পারে।
কিন্তু তার কোম্পানি ওহকাওয়ারা কাকোহকি জানায়, তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তা সত্ত্বেও সিজো আইসামাকে আটকে রাখা হয়।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। ওই সময়ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ চলছিল। মারা যাওয়ার পাঁচ মাস পর তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ বাতিল করা হয়।
তিনি যখন কারাগারে বন্দি ছিলেন তখন ক্যানসার চিকিৎসার জন্য আটবার জামিনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু একবারও তার জামিন মঞ্জুর করা হয়নি।
আরও পড়ুন : বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের দাম দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ
চিকিৎসা করাতে জামিন না দেওয়ায় এবং অন্যায়ভাবে আটক করায় পুলিশ এবং আদালতের কৌঁসুলিরা তার কবরে গিয়ে মাফ চেয়ে এসেছেন।
বিবিসি বলেছে, সোমবার আইসিমার কবরের কাছে যান তার স্ত্রী ও ছেলেরা। ওই সময় পুলিশ ও কৌঁসুলিদের থেকে ক্ষমা গ্রহণ করেন তারা।
তবে ওই মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী জানিয়েছেন, যারা তাকে বিনা অপরাধে দীর্ঘদিন আটকে রেখেছিল তাদের তিনি ক্ষমা করতে পারবেন না।
আইসামার কোম্পানি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে টোকিওর আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা করে। এই আদালত রায় দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অবৈধ ছিল। সঙ্গে কোম্পানিটিকে ১ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতেও রাষ্ট্রকে নির্দেশ দেন আদালত।
আইসামার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাকে বিনা দোষে যে আটক করা হয়েছে সেটির প্রকৃত কারণই এখনো খুঁজে বের করা যায়নি। এছাড়া জড়িতদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা খুবই নগণ্য।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে আরেকটি বহুল আলোচিত ঘটনায়, প্রায় ছয় দশক কারাবন্দি থাকার পর নির্দোষ প্রমাণিত ইওয়া হাকামাদার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন শিজুওকা প্রিফেকচার পুলিশের প্রধান। এই ঘটনাকে জাপানের বিচারব্যবস্থায় ভুল স্বীকারের দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখা হয়।