রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার গোলাম সাকলাইনের মৎস্য খামার যেন একটি ভিন্ন জগৎ। এখানে মাছ ধরতে গেলে সাধারণ জাল বা নৌকা নয়—পরতে হয় হেলমেট ও সেফটি জ্যাকেট। খামারের দায়িত্বে থাকা জেলেরা কোমর পানিতে নামার আগে মাথায় শক্তপোক্ত হেলমেট, আর গায়ে কমলা রঙের সেফটি জ্যাকেট পরে নেন।
৭০০ বিঘা জমির উপর গড়ে ওঠা প্রায় ২৫০টি পুকুরে চলমান এই খামার থেকে প্রতিদিন রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বাজারে পাঠানো হয়। খামারের একেকটি মাছের ওজন ১২–১৩ কেজি। জালে ধরা পড়লে মাছগুলো লাফ দিয়ে উঠে, তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গোলাম সাকলাইন বলেন, শুরুর দিকে আমরা কেবল একটি ছোট পুকুর দিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু এখন প্রতিদিন শত শত কেজি মাছ বাজারে যাচ্ছে। বড় মাছ ধরার সময় ঝাপটায় কর্মীরা আহত হতে পারে, তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হেলমেট ও লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক।
খামারের জেলেরা জানান, মাছ ধরার সময় কখন কী ঘটে তা বলা যায় না। মাছগুলো এত বড় ও শক্তিশালী যে, জালে ধরার সময় লাফিয়ে আঘাত করতে পারে। হেলমেট ও লাইফ জ্যাকেট আমাদের অনেক নিরাপদ রাখে।
খামারের সাফল্য দেখে স্থানীয় ও বাইরের ব্যবসায়ীরাও মৎস্যচাষে আগ্রহী হয়েছেন। সাকলাইন বললেন, আমার চেষ্টা হলো পেশাদারী ও নিরাপদভাবে মাছ উৎপাদন করা। অনেকেই এখন আমাদের পদ্ধতি অনুসরণ করছে।
পুকুরের কাটা রাস্তা, পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ পুরো ব্যবস্থাপনাটিও খামারের নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে।
দুর্গাপুরের স্থানীয়রা মনে করেন, এ ধরনের খামার শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করছে না, বরং নিরাপদ ও পেশাদারী মৎস্যচাষের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।