যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার যুক্তরাজ্য থেকেও বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ৯ জন বাংলাদেশিকে বিশেষ বিমানে করে জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ৩টায় লন্ডন থেকে এইচএমএফ৮৫১ নামের একটি বিশেষ বিমানে করে তারা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ফেরত আসা এই নয়জনই সিলেটের বাসিন্দা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, নারী-পুরুষসহ প্রথমে ১৮ জনের তালিকা ছিল। পরে তা কমে ১৫ জনে আসে। তবে শেষ পর্যন্ত ৯ জনকেই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিনিধিরা।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন—জুয়েল মিয়া, কয়সর মিয়া, মুজিবুল ইসলাম, নাদির খান, আব্দুল আমিন, মো. এনামুল হুসাইন, মাসুদ পারভেজ, হক মো. আমরানুল ও মো. ফয়সাল আহমেদ। তারা সবাই সিলেট জেলার বাসিন্দা।
ফেরত আসা ব্যক্তিরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করেই সেদেশের হোম অফিস তাদের ধরপাকড় করে ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের স্ত্রী ও সন্তান এখনও যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করছেন।
একজন ফেরত আসা ব্যক্তি বলেন, আমি ২০ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলাম। দু-দিন আগে বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম, তখন পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেল। সেদিনই বিশেষ বিমানে আমাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এক কাপড়েই আমাদের ফিরতে হয়েছে। আমার পুরো পরিবার এখনো সেখানে আছে।
- আরও পড়ুন
- সাত মাসে মালয়েশিয়া থেকে ২৮ হাজারের বেশি অভিবাসী বহিষ্কার
- এবার ১৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য
- আশ্রয়প্রার্থীদের আপিল প্রক্রিয়ায় কী পরিবর্তন আনছে যুক্তরাজ্য?
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে ১৫ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর কথা জানানো হয়েছিল। সেই তালিকায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ঢাকার বিভিন্ন জেলার অভিবাসীরা ছিলেন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যের হোম অফিস অবৈধ অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়ায় লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন সংশ্লিষ্টদের জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘যুক্তরাজ্য তাদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা যাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ফেরত পাঠানো ৯ ব্যক্তির মধ্যে কারও ভিসা ছিল না।
জেপিআই/কেএইচকে/এএসএম