আদালত প্রাঙ্গণে ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে স্লোগান দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সোলাইমান সেলিম ও আলী আজম মুকুল।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলার সময় তারা এই স্লোগান দেন।
এ সময় ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও হাজী সেলিমের ছেলে সোলাইমান সেলিম বলেন, ‘শেখ হাসিনা আবার আসবেন।’
বুধবার গভীর রাতে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে সোলায়মান সেলিমকে গ্রেফতার করে চকবাজার থানা পুলিশ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মো. রাকিব হাওলাদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
চকবাজার থানায় দায়ের করা ওই মামলায় পুলিশ সোলাইমান সেলিমকে গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তবে এ মামলার মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ। একইসঙ্গে রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
- আরও পড়ুন
- হত্যা মামলায় কারাগারে সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম
- শিক্ষার্থী নাহিদুল হত্যা: সাবেক এমপি মুকুল কারাগারে
- ভারতে শেখ হাসিনার ১০০ দিন, কীভাবে রয়েছেন-সামনেই বা কী?
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সকালে চাঁনখারপুল মোড়ে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে মো. রাকিব হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়ার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেলা পৌনে ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
এদিকে শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় গ্রেফতার ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
এদিন আলী আজম মুকুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আল আমীন তালুকদার তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে আলী আজম মুকুলকে গ্রেফতার করে র্যাব-২। পরে তাকে মিরপুর মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় নিহত হন নাহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মুকুল এ মামলার এজাহারনামীয় ১৬ নম্বর আসামি।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তিনি এখন পর্যন্ত সেখানেই আছেন।
জেএ/এমএমএআর/জিকেএস