ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় সাজা স্থগিত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন ও তার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজার। তারা এই মামলার এক ও দুই নম্বর আসামি। তারা দুজনই বিএনপি নেতা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) তাদের আপিল গ্রহণ করেছে। এদিন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন কালবেলাকে জানান, তিনি তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানকে আসামি করে পুলিশ পরিদর্শক ফজলুল রহমান পল্টন থানায় ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট একটি হয়রানিমূলক মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একতরফাভাবে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতে প্রত্যেক আসামিকে দণ্ডবিধির ৩৬৫/১২০ ধারায় ৫ বছরের সাজা ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ১২৪/১২০ ধারায় দুই বছর কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। হয়রানিমূলক ও ফরমায়েমি রায় স্থগিত করার জন্য আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন ও তার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজার দণ্ড স্থগিত ও মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সহকার সচিব মো. মফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাদের সাজা স্থগিতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে একই মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সাজা স্থগিত করা হয়েছে। পরে তারা আত্মসমর্পণ করে আপিল করেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে হাজির হয়ে শফিক রেহমান আপিল করার জন্য মামলার জাবেদা নকল (রায়ের অনুলিপি) সরবরাহের আবেদন করেন এবং তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। ওই দিন বিচারিক আদালত শফিক রেহমানকে আপিল করার জন্য রায়ের অনুলিপি সরবরাহের নির্দেশ দেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। রায়ের অনুলিপি পেয়ে শফিক রেহমান বুধবার (২১ নভেম্বর) আদালতে আপিল করেন। শফিক রেহমানের আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অন্যদিকে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান দন্ডের বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলায় দেওয়া দণ্ডাদেশ চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করেছেন মাহমুদুর রহমান। পরে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।