প্রবল আপত্তির মুখেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও সরকারের প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বন্ধ হয়নি। ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় এবং ক্লাবের সকল পর্যায়ের ক্রিকেট খেলোয়াড় ও সংগঠকবৃন্দ’র ব্যানারে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে এক ঝাঁক জাতীয়বাদী ঘরানার ক্রিকেট সংগঠক আপত্তি তুলে আলটিমেটাম দিলেও কাজ হয়নি।
শেষ পর্যন্ত জেলা ও বিভাগ থেকে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পক্ষের লোকজনই কাউন্সিলর হয়েছেন। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পক্ষের কথা শুনে একটু অবাক হচ্ছেন হয়তো। বাস্তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কারণ ১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবি প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুল নিজে চিঠি দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে অনুরোধ জানিয়েছেন, বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে শুধুমাত্র এডহক কমিটির সদস্যের মধ্য থেকে কাউন্সিলর পাঠানোর। সেই চিঠির বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনারের কাছে নির্দেশ যায় বলে অভিযোগ আছে।
কিন্তু সে অভিযোগ টেকেনি। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে বিসিবি যে খসড়া কাউন্সিলর তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির বাইরে কেউ নেই।
তারই প্রতিবাদে আজ বুধবার দুপুরে গুলশানের এক হোটেলে ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় এবং ক্লাবের সকল পর্যায়ের ক্রিকেট খেলোয়াড় ও সংগঠকবৃন্দ’র ব্যানারে একটি সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। তবে সেটি আর হয়নি।
এদিকে বুধবার সকাল থেকে ঢাকার ক্লাব পাড়া ও ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট মহলে জোর গুঞ্জন, বাতিল হতে পারে তামিম ইকবালের কাউন্সিলরশিপ।
বলে রাখা ভালো, কাউন্সিলরশিপ যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন আজ ২৩ সেপ্টেম্বর। শোনা যাচ্ছে, আজই তামিম ইকবালের কাউন্সিলরশিপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
ভাবছেন হঠাৎ কী হলো যে, তামিমের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা! একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, তামিম ইকবাল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা ছাড়ার ঘোষণা দেননি। সে অর্থে তিনি এখনও নিয়মিত ক্রিকেটার। কিন্তু বিশ্বের কোনো দেশে খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ার নজির নেই।
বিসিবির গঠনতন্ত্রেও তাই বলা আছে। অর্থাৎ কোনো ক্রিকেটারকে বোর্ড কর্মকর্তা হতে হলে আগে খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করতে হবে। খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় বোর্ডে ঢোকার সুযোগ নেই। তামিমের পূর্বসূরী তার আপন চাচা আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, নাইমুর রহমান দুর্জয়সহ বিভিন্ন সময় ক্রিকেটারদের মধ্যে যারা বোর্ডে এসেছেন, সবাই খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি ঘটিয়েই বোর্ড কর্তা হয়েছেন।
তামিম আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে কাউন্সিলরশিপ নিলে হয়তো এই প্রশ্ন উঠতো না। এদিকে খেলোয়াড়ি জীবন শেষ না করেও তামিম আরও একটি অন্য পরিচয়ে কাউন্সিলরশিপ পেতে পারেন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, সেখানেও গলদ আছে!
বলে রাখা ভালো, তামিম এ বছর প্রিমিয়ার লিগে গুলশান ক্রিকেটার্সকে অর্থায়ন করেছেন। তামিম যদি সেই ক্লাবের কর্মকর্তা (সভাপতি, সম্পাদক, সমন্বয়কারী) পরিচয়ে কাউন্সিলেরশিপের আবেদন করেন; সেটা বৈধ।
কিন্তু জানা গেছে, তামিম কাগজে-কলমে গুলশান ক্লাব সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক নন। শুধু অর্থদাতা। যদি তাই হয়, তাহলে তার কাউন্সিলরশিপ পেতে ঝক্কি পোহাতেই হবে।
এআরবি/এমএমআর/এমএস