গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের চিকিৎসার বিষয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়। সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. চং সি জ্যাক ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছেন। ডা. চং সির দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে জানা গেছে, রোগীর বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতিই আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী উপযুক্ত, তাদের বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের দগ্ধ সদস্যদের চিকিৎসার আপডেট (সর্বশেষ অবস্থা) নিয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, রোগীর পরিবারের দাবি ছিল সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়ার। এর আগেও আমরা মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিসহ বিভিন্ন সময়ে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় সিঙ্গাপুরের বার্ন বিশেষজ্ঞ ডা. চং সি জ্যাককে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ডা. চং সি জ্যাক গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় এসে ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে রাত ১২টার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। আজ বুধবার সকালেই দগ্ধদের সিটি স্ক্যান করা হয়। ডা. নাসির জানান, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট ভালো এসেছে। রোগীর বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী আমরা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে রোগীকে বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হলে, সেই বিষয়েও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের মত নেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে ডা. নাসির বলেন, ডা. চং জানিয়েছেন, চিকিৎসার নিয়মকানুন দেশে এবং সিঙ্গাপুরে প্রায় একই রকম। তবে গুরুতর দগ্ধ রোগীকে বিমানে স্থানান্তরের সময় শারীরিক জটিলতা ও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই তিনি দেশে চিকিৎসা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক আরও বলেন, যদি কেউ শতভাগ দগ্ধও হন, তার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত একটি ইউনিভার্সাল ট্রিটমেন্ট প্রটোকল রয়েছে। সেই প্রটোকল মেনেই আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি।
এদিকে বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের দগ্ধ সদস্যদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ চলছে এবং প্রয়োজনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত সাহারা মার্কেটের রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের চারজন সদস্য দগ্ধ হন। তারা হলেন ১০০ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও নুরুল হুদা। ৪২ শতাংশ দগ্ধ অফিসার খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ও ৫ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার জয় হাসান। এরমধ্যে ইতিমধ্যে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও নুরুল হুদা।
টিটি/এমএমকে/জেআইএম