‘টাইটানিক’র জ্যাক থেকে হলিউডের কিংবদন্তি তিনি

6 hours ago 5

আজকের দিনটি (১১ নভেম্বর) বিশেষ এক তারকার জন্য। তিনি হলেন লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও। হলিউডের এই কিংবদন্তিতুল্য অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিবেশকর্মীর আজ জন্মদিন। ১৯৭৪ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বয়স পেরোল ৫১, কিন্তু তারুণ্যের দীপ্তি আর ক্যামেরার প্রতি অনন্য আবেগ আজও যেন তার চোখে ছুঁয়ে যায়।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে লিওনার্দো শুধু একজন অভিনেতা হিসেবেই নয়, বরং এক ‘লিগেন্ড’ হিসেবে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টাইটানিক’ সিনেমায় ‘জ্যাক ডসন’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি রাতারাতি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেই জ্যাক ডসনের চরিত্র এখন শুধুই সিনেমারই নয়, বরং প্রজন্মের কাছে রোমান্টিক আদর্শের প্রতীক। এই চরিত্রের মাধ্যমে লিওনার্দো দেখিয়েছিলেন কিভাবে ছোটো ছোটো মুহূর্তও দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলতে পারে।

‘টাইটানিক’র পর থেকে তার ক্যারিয়ার যেন এক ধারাবাহিক সাফল্যের গল্পে পরিণত হয়। ‘দ্য অ্যাভিয়েটর’-এ হাওয়ার্ড হিউজসের চরিত্রে, ‘শাটার আইল্যান্ড’-এ মনস্তাত্ত্বিক জটিল চরিত্রে, ‘ইনসেপশন’-এর নীরব জাদুকরের ভূমিকায় এবং ‘দ্য গ্রেট গ্যাটসবি’-তে জয় গ্যাটসবির আবেগময় চরিত্রে তিনি প্রতিটি চরিত্রে নিখুঁত প্রমাণ রেখেছেন যে, অভিনয় শুধু একটি কাজ নয়, বরং জীবনের ছোঁয়া। বিশেষ করে ‘দ্য উলফ অফ ওয়াল স্ট্রিট’-এ জর্ডান বেলফোর্টের চরিত্রে তার নৃত্য, উচ্ছ্বাস এবং সংকটের মিশ্রণ এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।

অভিনয়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি শুধু জনপ্রিয়তা নয়, বরং সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকেও নজর রেখেছেন। দীর্ঘদিন ধরে লিওনার্দো পরিবেশ ও জলবায়ু সচেতনতার কাজে যুক্ত আছেন। তার প্রতিষ্ঠিত “লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও ফাউন্ডেশন” বিশ্বজুড়ে বন সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী রক্ষা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রচারে কাজ করছে। লিওনার্দো নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও প্রমাণ করেছেন যে, সে শুধু বড়পর্দার নায়ক নয়, বরং বাস্তব জীবনেরও একজন প্রভাবশালী মানুষ।

অস্কার জয়েও তার সংগ্রামের গল্পও সমানভাবে অনুপ্রেরণামূলক। ২০১৬ সালে ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এ তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার জেতেন। যদিও এর আগে একাধিকবার মনোনয়ন পেলেও পুরস্কার ছোঁয়া যায়নি। সেই প্রতীক্ষার মুহূর্ত এবং এর চারপাশে তৈরি হওয়া মিম এবং জনপ্রিয় চর্চা আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মুখে হাসি ফোটায়।

৫১ বছর বয়সেও লিওনার্দো অভিনয়ে যেমন শারীরিকভাবে প্রস্তুত, তেমনি সামাজিক দায়িত্ববোধে অনন্য। নিজের জন্মদিনও তিনি প্রায়শই বিলাসী উদযাপন এড়িয়ে মানবকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত থাকেন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্র দূষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে তিনি নিয়মিত কাজ করছেন।

আরও পড়ুন:
ক্যাটরিনা-ভিকির ছেলে বড় হয়ে কেমন হবে, জানালেন জ্যোতিষী
গোবিন্দকে নিয়ে সুনীতার খোলামেলা মন্তব্য

দর্শকদের কাছে লিওনার্দো মানে শুধু নিখুঁত অভিনয় নয়, স্টাইলের অনন্য সংজ্ঞা এবং মানবিকতার এক উজ্জ্বল মুখ। ‘টাইটানিক’ থেকে ‘ডোন্ট লুক আপ’-প্রতিটি সিনেমায় তার উপস্থিতি যেন মনে করিয়ে দেয়, সিনেমা কেবল বিনোদন নয়, দর্শকের জীবনে ছোঁয়া দেওয়ার মাধ্যম। আজকের এই দিনে, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিওর জন্মদিনে আমরা কেবল একজন অভিনেতাকে নয়, বরং একজন প্রেরণার প্রতীককে স্মরণ করি।

শুভ জন্মদিন, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও-হলিউডকে যেমন বদলে দিয়েছ, তেমনি অনুপ্রেরণা হয়ে থেকো আগামী প্রজন্মের জন্যও।

এমএমএফ/জেআইএম

Read Entire Article