টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। ফলে মূল্যসূচকও ধারাবাহিকভাবে কমছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (৯ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবস সূচকের পতন হলো। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু লেনদেনের সময় ১০ মিনিট পার হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। আর লেনদেনের শেষদিকে ভালো-মন্দ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ঢালাও দরপতন হয়। এতে মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২৯টির। আর ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন
টানা পতনে বাজার মূলধন হারালো সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা
শেয়ারবাজারে পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন স্থগিত
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৬৯টির দাম কমেছে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭২টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৮টির এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দামও বাড়েনি। বিপরীতে ২৫টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে গত ৩ জুলাইয়ের পর ডিএসইর প্রধান সূচক সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে আসলো।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০২ কোটি ২০ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৯ কোটি ৭৯ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকার। ১৩ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মনোস্পুল পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, সায়হাম কটন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, রানার অটোমোবাইল, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল এবং শাহজিবাজার পাওয়ার।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৯টির এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/জিকেএস

11 hours ago
7









English (US) ·