টানা সাত কার্যদিবস পতনে শেয়ারবাজার, লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে

2 hours ago 6

টানা দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। অব্যাহত পতনের মধ্যে পড়ে মূল্যসূচক চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে এসেছে। আর লেনদেন কমতে কমতে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবস সূচকের পতন হলো। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক গত ৩০ জুনের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে এসেছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। কিন্তু লেনদেনের সময় ১০ মিনিট পার হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা পার হওয়ার আগেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

তবে প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এতে আবারও সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে বাজারে ঢালাও দরপতন হয়। ভালো-মন্দ সব ধরনের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭৫টির। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৪টির দাম কমেছে এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫২টির দাম কমেছে এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৯টির এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির ৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৬টির দাম কমেছে এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে গত ৩০ জুনের পর ডিএসইর প্রধান সূচক সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে আসলো।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১০ পয়েন্টে নেমে গেছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ৩৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪০২ কোটি ২০ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।

এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিমিট অ্যালায়েন্স পোর্ট।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, মনোস্পুল পেপার, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, পাওয়ার গ্রিড এবং রানার অটোমোবাইল।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৪০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

এমএএস/এমএএইচ/এমএস

Read Entire Article