টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ তদন্ত প্রতিবেদনে যা ছিল

3 hours ago 4

দুর্নীতির অভিযোগে সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। এ আত্মবিশ্বাস থেকে তদন্ত করতে টিউলিপ মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন। 

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) লাউরি ম্যাগনাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে চিঠি লিখেন। তাতে লাউরির পর্যবেক্ষণ ও প্রাপ্ত তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। 

সেই চিঠিতে টিউলিপের দাবির পক্ষে শক্তি জোগাচ্ছেন মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, টিউলিপ মন্ত্রিত্বের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন কিনা তা শেষ পর্যন্ত ম্যাগনাস বুঝতে পারেননি। ম্যাগনাস তাকে অভিযুক্তও করেননি বা তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কোনো কিছু করার প্রমাণ খুঁজে পাননি। তবে ম্যাগনাস টিউলিপকে সরাসরি নির্দোষ ঘোষণা না করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এরপরই টিউলিপ সিদ্দিক স্বেচ্ছায় মন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট নেওয়া প্রসঙ্গে লাউরি ম্যাগনাস প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে লিখেছেন, টিউলিপ কিংস ক্রসে তার ফ্ল্যাটের মালিকানার উৎস সম্পর্কে জানতেন না। তিনি ধারণা করেছিলেন যে, তার মা-বাবা ফ্ল্যাটটি কিনে তাকে দিয়েছিলেন। অথচ ভূমি রেজিস্ট্রি হস্তান্তর ফর্মে টিউলিপের সই রয়েছে বলেও জানানো হয়। 

এদিকে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পুরোটা সময় সহযোগিতা এবং অর্থ আত্মসাতে তার সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে একটি ছবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার পাচ্ছে।

ছবিটি ১২ বছর আগের। যেখানে বাংলাদেশের শেখ পরিবারের সঙ্গে টিউলিপের ঘনিষ্ঠতা প্রমাণ করে। অথচ, পরিবারের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই বরং সম্পর্ক কেবলই আত্মীয়ের বলে বহুবার দাবি করে আসছেন টিউলিপ।

এ দাবিটিও মেনে নিয়েছেন লাউরি। তিনি বলেন, যে ছবিতে পুতিন, খালা শেখ হাসিনা, খালাতো ভাই জয়ের সঙ্গে তাকে দেখা যাচ্ছে তা ওই সময় টিউলিপ নিজের সম্মান বাড়াতে ব্যবহার করেছিলেন। অবশ্য চিঠিতে শেখ পরিবারের সঙ্গে টিউলিপের সম্পর্কের বিষয়টি এড়ানো অসম্ভব বলেও ইঙ্গিত রয়েছে। 

টিউলিপ তার পদত্যাগ পত্রে লাউরির রেফারেন্স টেনেছেন। লিখেছেন, মন্ত্রীদের মানদণ্ডবিষয়ক আপনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসকে ধন্যবাদ জানাই, যিনি আমার স্বপ্রণোদিত আবেদন দ্রুত ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করেছেন এবং আমার বর্তমান ও অতীত আর্থিক এবং বাসস্থানসংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার সুযোগ দিয়েছেন।

আপনি অবগত আছেন, আমার অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা করার পর, স্যার লরি নিশ্চিত করেছেন, আমি মন্ত্রিত্ববিধি ভঙ্গ করিনি। তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার মালিকানাধীন বা বসবাসকৃত সম্পত্তি বা আমার কোনো সম্পদ বৈধ উপায় ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে এসেছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।

তার পদত্যাগপত্রের জবাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লিখেছেন, আপনার পদত্যাগ গ্রহণ করতে গিয়ে আমি স্পষ্ট করতে চাই যে, স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, মন্ত্রিত্বের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং আপনার আর্থিক অনিয়মের কোনো প্রমাণও নেই। স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে নিজেকে সমর্পণ করায় এবং সত্য উদ্ঘাটনে পুরোপুরি সহযোগিতা করার জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

Read Entire Article