টেলিকম খাতে নেটওয়ার্ক এবং ব্যবসা পরিচালনায় লাইসেন্স পুনর্বিন্যাস করতে আগামী মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব পেশ করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
তবে এক্ষেত্রে বিদ্যমান লাইসেন্সিংয়ে রূপান্তর, টেকসই বিনিয়োগ নীতিমালা তৈরি এবং রেগুলেশনকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন কমিশন চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। এসময় বিটিআরসির কমিশনার, মহাপরিচালক ও পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সময়ের চাহিদা অনুযায়ী টেলিকম খাতের লাইসেন্স সংস্কারে কাজ শুরু করেছে বিটিআরসি। এ লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রোডম্যাপ পুনর্বিন্যাস কমিটি। এরই মধ্যে বিটিআরসি কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদের নেতৃত্বে তিনটি বৈঠক করেছে সংস্কার কমিটি।
দেশের টেলিকম খাতকে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতা-বান্ধব করতে গ্রাহক-ব্যবসা-সরকার এই ত্রিভূজ অংশীজনদের নিয়ে এই সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। ব্যবসা বাঁচাতে নয়, গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষায় কমিশন কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
সংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমদাদ উল বারী বলেন, ২০২৭ সাল নাগাদ লাইসেন্স নবায়ন সীমা অতিক্রমের পর এই সংস্কারটি কাজ করবে। আর নীতিমালাটি টেকসই করতে গ্রাহকের লেন্স দিয়ে তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে রেগুলেশনের নামে কোম্পানিগুলোকে রেগুলেট নয়; ফ্যাসিলেট ও স্পন্সর করা হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও জানান, ডিজিটাল উন্নয়ন সহযোগী খাত হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হবে। এর ওপর ভিত্তি করে নীতিমালা তৈরি হবে। এক্ষেত্রে পরিষ্কার ও টেকসই নীতিমালার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হচ্ছেন না। জটিল ও টুকরো টুকরো নেটওয়ার্ককে এক সুতোয় গাঁথতে রিভিউ করে সহজ, সক্ষম ও সাশ্রয়ী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। তরঙ্গের ওপর চাপ কমিয়ে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডে স্থানান্তর করা হবে।
তিনি আরও জানান, বড় পরিসরের ডিজিটল সেবা মেটাতে ফ্রিক্সড ব্রডব্যান্ডের পথে থাকা বাধা কাটিয়ে তুলতে যেন নতুন প্রযুক্তি সহজেই অভিযোজিত হয় সে দিকটায় গুরুত্বারোপ করতে অ্যাকটিভ শেয়ারিং উন্মুক্ত করা এবং সবুজ প্রযুক্তির দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স বাদ দেওয়া এবং সুস্থ প্রতিযোগিতায় বাধা সৃষ্টিকারী ভার্টিক্যাল লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।
ফাইভ-জি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কবে কখন চালু হবে তা এখনই বলতে পারবো না। তবে চালু করার জন্য বিভিন্ন কনসালটেশন বৈঠক করছি। কাজ করছি। পাশাপাশি জুনের মধ্যে ৭০০ মেগাহার্জ তরঙ্গ নিলামের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারের ব্যাপার, বিটিআরসির নয়। তবে ভ্যাট-ট্যাক্স যতোটা কমানো যায়, ততোটা কমানো দরকার। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার দায় পোস্টদাতার, সোশ্যাল মিডিয়ার নয়।
এসইউজে/এমকেআর/এমএস