টঙ্গীতে অবস্থিত টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে (টেশিস) হাইটেক পার্ক হিসেবে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ফলে দেশে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়েব আহমেদ।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঈদের ঠিক আগে আগে টঙ্গীতে অবস্থিত টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে (টেশিস) হাইটেক পার্ক হিসেবে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়ে তার অনুমোদন দিয়েছি। টেলিকম ও আইসিটি সচিবদ্বয় এই রূপান্তরে আমাকে সাহায্য করছেন।’
প্রতিষ্ঠানটি এখন নানা সমস্যার সম্মুখীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৬৩ সালে জার্মান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত টেশিস একসময় দেশের প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে এটি নানা সমস্যার সম্মুখীন। দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা নেওয়া হলেও, তা কার্যকরভাবে সফল হয়নি। দোয়েল ল্যাপটপের বেশির ভাগ অংশ মালয়েশিয়ায় উৎপাদিত হয়ে দেশে শুধু এসেম্বল করা হয়েছে, যার ফলে প্রকল্পটি প্রত্যাশিত ফলাফল আনতে পারেনি। এ ছাড়া ল্যান্ডফোন সেট তৈরির সক্ষমতা থাকলেও এটি বাটন বা ফিচার ফোন উৎপাদনের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের আহসানউল্লাহ মাস্টারের ছেলে এমপি রাসেল (আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য) শিল্প এলাকার জমি দখল করে সেখানে একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত এই জমি অন্য কাজে ব্যবহারের ফলে টেশিসের অস্তিত্ব রক্ষাও কঠিন হয়ে পড়েছে।’
প্রত্যাশা জানিয়ে ফাইজ তাইয়েব আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে ওয়াইফাই রাউটার, বুস্টার, চার্জারসহ মোবাইল টেলিফোনের প্রায় সব ধরনের অ্যাকসেসরিজ আমদানি করতে হয়। এমনকি সাধারণ ইউএসবি কেবল, পাওয়ার কেবল, অ্যাডাপ্টার পর্যন্ত বিদেশ থেকে আনা হয়। এর ফলে দেশের কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে টেশিসের মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘হাইটেক পার্ক নয়, বরং আপাতত টেশিসকে একটি কার্যকরী মিড-টেক বা লো-টেক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা চীনের বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান বাংলাদেশে আনার জন্য উৎসাহিত করেছেন। টেশিসের বিদ্যমান অবকাঠামোগত সক্ষমতাকে কীভাবে এই উদ্যোগের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’
এই উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশ প্রযুক্তি উৎপাদন খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারবে বলেও মনে করছেন তিনি।